ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জাপানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
জাপানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

ঢাকা: জাপানের টোকিওতে বাংলাদেশ দূতাবাসের উদ্যোগে যথাযথ ভাবগাম্ভীর্য ও মর্যাদায় মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত হয়েছে।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে অনুষ্ঠান শুরু হয় ভাষা শহীদদের স্মরণে দূতাবাসের অস্থায়ী শহীদ মিনার বেদীতে পুস্পাস্তবক অর্পণের মাধ্যমে।

জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানের পরবর্তী অংশে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় সঙ্গীত বাজানোর সঙ্গে বাংলাদেশের  জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করেন রাষ্ট্রদূত। এরপর ভাষা শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

বিদ্যমান করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় বাংলাদেশ এবং জাপান সরকার কর্তৃক জারিকৃত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে দূতাবাস এ বছর অনলাইনে শহীদ দিবসের অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে। শহীদ দিবস উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর দেওয়া বাণী পাঠ করা হয়। এছাড়া ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত ও বাংলাদেশের সমৃদ্ধি কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।

আলোচনা অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। তিনি ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান এবং শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। ভাষা আন্দোলনের পটভূমি ও তাৎপর্য তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির সাথে অবিচ্ছিন্নভাবে মিশে আছে ভাষা আন্দোলন এবং ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’ দিনটি।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, ১৯৯৯ সালে ইউনেস্কো বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন এবং ভাষা শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে, ২১ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। ফলে ‘একুশ’ এখন সার্বজনীন, ‘একুশ’ এখন পুরো বিশ্বের। ‘একুশ’ এখন বিশ্বের মানুষের কাছে সংগ্রাম ও মর্যাদার প্রতীক। ‘একুশ’ আমাদের প্রেরণা, ‘একুশ’ আমাদের শিক্ষা দেয় অন্যায়ের কাছে মাথা নত না করার।

অনলাইন আলোচনায় অংশ নিয়ে জাপান বাংলাদেশ সোসাইটির (জেবিএস) প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে জানান, জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্ক উন্নয়নে জেবিএস আরো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।  সেক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর মাসাকি ওহাসি বাংলা ভাষার ব্যবহার নিয়ে বাংলায় আলোচনা করেন। এছাড়া ভিডিও বার্তায় জাপানিজ ন্যাশনাল কমিশন ফর ইউনেস্কো এর ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল ইয়োশিয়াকি ইশিদা এই অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।

তোশিমা সিটির মেয়র ইউকিও তানাকো তার ভিডিও বার্তায় বলেন, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস জাপানিদের তাদের মাতৃভাষার কথা মনে করিয়ে দেয়, তিনি জানান তোশিমা সিটি টোকিও অলিম্পিকে বাংলাদেশ দলকে আতিথেয়তা দেবে।

জাপান প্রবাসী বাংলাদেশি কমিনিউটির নেতারাও এই আলোচনায় অংশ নেন। বক্তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে ভাষা সৈনিক ঘোষণার প্রস্তাব করেন এবং বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষায় সবাইকে কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে ভাষা আন্দোলন ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। জাপানি নাগরিক ও প্রবাসী বাংলাদেশিসহ উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অতিথি এবং দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২১
টিআর/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।