ঢাকা: একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভাষা সৈনিকেরা নিজের বুকের তাজা রক্ত দিয়ে রাঙিয়েছিলেন ঢাকার রাজপথ। তারপর কত দীর্ঘ পথ, অবশেষে আমাদের মাতৃভাষা প্রতিষ্ঠা পেলো রাষ্ট্রভাষা হিসেবে।
তাই তো একুশ এলেই তরুণেরা উদ্যমী হয়ে ওঠে। বায়ান্নোর স্মৃতি স্মরণ করে একুশকে রাঙিয়ে তোলে রঙিন ফুলের উজ্জ্বলতায়।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’ গানের সঙ্গে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের বেদিতে ফুলেল শুভেচ্ছা দিতে আসেন সর্বস্তরের মানুষ। যদিও করোনার কারণে এবার ভোরবেলা খালি পায়ে প্রভাতফেরির আয়োজন সেভাবে চোখে পড়েনি, তবুও শ্রদ্ধা নিবেদনে কমতি নেই কারও।
এর আগে রাতে বিশেষ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষ হলে সর্বস্তরের মানুষের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার। এ সময় মানুষ শ্রদ্ধা জানাতে ফুলের তোড়া নিয়ে ভেতরে প্রবেশ করেন। রাত ৩টা পর্যন্ত শ্রদ্ধা নিবেদন চলে। এরপর আাবার শুরু হয় সকাল থেকে। বেলা যত গড়িয়েছে, অপেক্ষার লাইন দীর্ঘ হয়েছে তত।
সকালে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা প্রবীণ নাগরিক আমিরুল ইসলাম বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আমি গত ১০ বছর ধরে ফুল দিতে আসছি। পলাশীর গেট দিয়ে ঢোকার অনুমতি থাকে। সেখানে থাকে লম্বা লাইন। যে লাইন শুরু হয় ভোররাত থেকে। অনেকক্ষণ দীর্ঘ লাইনে থেকে অবশেষে শ্রদ্ধা জানাতে পেরেছি ভাষা শহীদদের স্মরণে। তবে এবার করোনার কারণে মানুষের সংখ্যা অনেক কম। এখন প্রত্যাশা একটাই, পৃথিবী সুস্থ হয়ে যাক, অমর একুশে আবার আগের রূপে ফিরে আসুক।
শহীদ মিনারে ফুল দিতে গিয়ে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হয় জেনেও ভাষা সৈনিকদের স্মরণ করছেন বিভিন্ন বয়সের লাখো নারী-পুরুষ। সারিবদ্ধভাবে শহীদ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। তাদের দেওয়া ফুলে ইতোমধ্যে ভরে গেছে শহীদ মিনারের বেদি।
প্রায় এক ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকার পর শহীদ বেদিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য দিতে পেরেছেন ঢাকা আইডিয়াল কলেজ থেকে শ্রদ্ধা জানাতে আসা শিক্ষার্থী হাসিব নূর। তিনি বলেন, আমাদের ভাষা আমাদের অহংকার। এই ভাষার স্বীকৃতির জন্য অনেকেই বহু ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আর সেই বীরদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে একটু অপেক্ষা করার কষ্টতো করাই যায়। তাই আজ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এখানে এসেছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪০২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২১, ২০২০
এইচএমএস/এমজেএফ