ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা হয়েছে: তাপস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা হয়েছে: তাপস

ঢাকা: পঁচাত্তর সালের পর ভাষা আন্দোলনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবদান মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।

রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাতে গেন্ডারিয়ার জহির রায়হান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে ডিএসসিসি আয়োজিত মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ব্যারিস্টার শেখ ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, ‘১৯৪৮ সাল থেকে ভাষা আন্দোলনের যে সূত্রপাত, তার অন্যতম পুরোধা ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের পরে মুক্তিযুদ্ধের সকল ইতিহাস থেকে জাতির পিতাকে  যেমন মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে, তেমনি পঁচাত্তরের পরে ভাষা আন্দোলনসহ তাঁর পূর্বের  অবদানগুলোও মুছে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে। ভাষা আন্দোলন থেকেই যে স্বাধীনতা সংগ্রামের মূল সূচনা, সেটাও মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। ’

ডিএসসিসি মেয়র বলেন, ’১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলন শুরু, ১৯৫২ সালে রক্ত দেয়া এবং ১৯৫৬ সালে আমরা তা  অর্জন করতে পেরেছিলাম। তাও ওয়ান অফ দ্য স্টেট ল্যাঙ্গুয়েজেস অব পাকিস্তান। উর্দু স্টেট ল্যাঙ্গুয়েজ, তার সঙ্গে আরেকটি রাষ্ট্র ভাষা হলো বাংলা। বাংলা দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। যদিও আমরা ছিলাম সংখ্যাগরিষ্ঠ। ‘

এসময় বরেণ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে সিটি কর্পোরেশনের সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে শেখ তাপস বলেন, ‘এখন থেকে ডিএসসিসির আওতাধীন এলাকার বরেণ্য, পদকপ্রাপ্ত ও স্বনামধন্য ব্যক্তিদেরকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিভিন্ন  কার্যক্রম ও বিভিন্ন সম্মাননা প্রদর্শনের মাধ্যমে আমাদের কার্যক্রমে আরও বেশি সম্পৃক্ত করা যায়, সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। ’

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বক্ষেত্রে বাংলার ব্যবহারে বারবার নির্দেশনা দিয়ে চলেছেন। আজকে মুঠোফোনে যে বাংলা বার্তা আমরা পাই, তা শেখ হাসিনার নির্দেশেই হয়েছে। আমরা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছি। দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার সকল সরকারি-বেসরকারি-আধা সরকারি-স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের নামফলক-চিহ্নফলক অবশ্যই বাংলায় লিখতে হবে। কোনো ইংরেজি শব্দ বাংলা বর্ণ দিয়ে লেখা যাবে না। এই গণবিজ্ঞপ্তি আমরা জারি করেছি, কারণ আজকে আমরা দেখছি, অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে বাংলাভাষা তার মর্যাদা এবং সম্মান হারিয়ে ফেলেছে। এজন্য আমরা মনে করি, দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এলাকার সকল নামফলক এবং চিহ্নফলক বাংলায় হওয়া আবশ্যক। ’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট  অভিনয় শিল্পী সালমা বেগম সুজাতা বলেন, ‘বায়ান্ন সালে যে সকল শহীদের রক্ত এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদের ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে বাংলা ভাষা, সেই ত্যাগের ফসল আমাদের এই একুশে পদক। এটা মহান প্রাপ্তি, বিশেষ প্রাপ্তি। এটা স্বর্গীয় সুখ। ’
   
ডিএসসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এ বি এম আমিন উল্লাহ নুরীর সভাপতিত্বে এবং সচিব আকরামুজ্জামানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মেয়র প্যানেলের ১ নং সদস্য এবং ৪৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. শহিদ উল্লাহ।   

আলোচনা সভার শুরুতেই খ্যাতিমান অভিনেতা প্রয়াত এটিএম শামসুজ্জামান এবং ভাষা শহীদ ও ভাষা সৈনিকদের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।  

বাংলাদেশে সময়: ০২১১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
আরকেআর/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।