ঢাকা: আদেশ পালনে ব্যর্থ হলে পাঁচ লাখ থেকে ১০ লাখ টাকার ক্ষতিপূরণের বিধান রেখে ‘বাংলাদেশ পেটেন্ট আইন, ২০২১’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এছাড়া বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন ২০২১’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলনকক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চ্যুয়াল মন্ত্রিসভা বৈঠকে এ সংক্রান্ত দুইটি পৃথক প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার রেজুলেশন অনুযায়ী এ দুটি আইন করা হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রিপরিষদ সচিব।
বৈঠক শেষে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, পেটেন্ট ও ডিজাইন আইন ছিল ১৯১১ সালের। সেটা দিয়েই চলছিল। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন জটিলতার জন্য...এত বেশি ডাইভারসিফিকেশন এবং স্পেশালাইজেশন হয়ে গেছে যে একটা আইনে দুইটা কাভার করছিল না। পরের ২০১৬ সালে এ আইনটিকে দুই ভাগ করে একটা পেটেন্ট আইন, আরেকটি ডিজাইন আইনের খসড়া করা হয়েছিল। শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে আইনটি আনা হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইন অনুযায়ী নতুনত্ব ও উদ্ভাবনী বিষয় বিদ্যমান থাকলে প্রযুক্তিগত যেকোনো পণ্য উদ্ভাবনী পেটেন্ট যোগ্য হবে। এটা আইনের মধ্যে বিধান রাখা হয়েছে। আইন অনুযায়ী নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে কোনো একটি পেটেন্টের একক বা যৌথ উদ্ভাবনকে আবেদনের ফলে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে উদ্ভাবকরা যৌথ উদ্ভাবকের পেটেন্টের সুরক্ষা দেওয়া হবে।
খসড়া আইন অনুযায়ী, পেটেন্ট মালিক ২০ বছরের জন্য পেটেন্ট রাইট পাবেন। ২০ বছর পর এটা পাবলিক সম্পদ হয়ে যাবে। কোনো ক্ষেত্রে যদি জেনেটিক রিসোর্সের অবৈধ ব্যবহার হয়, সেক্ষেত্রে পেটেন্ট হস্তান্তর করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে দেওয়া যাবে। পেটেন্ট বাতিল এবং অধিকার কার্যকর করার বিধান এ আইনে আছে। এ আইনে যেসব মামলা-মোকদ্দমা হবে সেগুলো সিভিল ন্যাচারের হবে। সিভিল কোর্ট এগুলো হ্যান্ডেল করবে।
এছাড়া কেউ যদি চিটিং করে সেগুলো তো আলাদা, সেগুলো পেনাল কোড অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি আদেশ পালনে কেউ যদি ব্যর্থ হয় তারা সুপারিশ করেছিলেন ২০ থেকে ৮০ হাজার টাকার ক্ষতিপূরণ। এটাকে পাঁচ লাখ থেকে ১০ লাখে উন্নীত করে দেওয়া হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, আইনের অধীনে এখানে একটা রেজিস্ট্রারের দফতর থাকবে। এ ব্যবস্থার দফতর থেকে সবাই রেজিস্ট্রেশন করবে। একই সঙ্গে সুপারভিশন ও মনিটরিং করা হবে। এ রেজিস্ট্রার ডিজাইনের আইনেরও অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অধিদফতর হিসেবে কাজ করবে।
এদিকে বৈঠকে ‘বাংলাদেশ শিল্প-নকশা আইন, ২০২১’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল বলেন, আগের আইনের অধীনে ডিজাইন এবং ট্রেডমার্কস রেজিস্ট্রার অধিদফতর ছিল, সেটা বহাল থাকবে। এ অধিদফতরের অধীনে একটি শিল্প ইউনিট থাকবে। এ আইনের অধীনে শিল্প নকশা নিবন্ধন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম সম্পন্ন হবে। আইনের অধীনে বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে এবং ফি দেওয়ার সাপেক্ষে শিল্প নকশার নিবন্ধনের মেয়াদ হবে পাঁচ বছর। কারো যদি এক্সক্লুসিভ এক্সট্রাঅর্ডিনারি কোনো রকম থাকে তাহলে সে দরখাস্ত দিলে তাকে আরও পাঁচ বছরের জন্য মেয়াদ বাড়ানো হবে। আগের আইনের মধ্যে এটা ছিল না।
এছাড়া কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে যদি শিল্প নকশা নিবন্ধিত হয় সে নকশা প্রতারণামূলকভাবে যদি কেউ ব্যবহার করে তবে মালিক ক্ষতিপূরণ পাবে। তবে সিভিল আইন অনুযায়ী এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
** আন্তর্জাতিক ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার চুক্তি অনুসমর্থন
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
জিসিজি/আরআইএস