ঢাকা: পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পে তহবিল সংকট দেখা দিয়েছে বলে দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে গ্রুপ লিমিটেড (সিআরইসি)।
তারা বলছে, গত সাত মাসে তারা কোনো কাজের বিল পায়নি।
তবে প্রকল্প পরিচালক বলছেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি ঠিক নয়। তারা অত টাকা পাবে না। তাছাড়া সব কাজকর্ম ঠিকঠাক মতো চলছে।
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প (পিবিআরএলপি) বর্তমানে দেশের অন্যতম মেগা ফাস্ট-ট্র্যাক প্রকল্প। সরকার রেলপথসহ একই দিনে পদ্মা সেতু উদ্বোধন করতে চায়।
কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি অনুযায়ী, তহবিলের অভাবে কাজে ধীর গতি চলছে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করা নিয়ে তারা চিন্তিত।
সিআরইসির তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশ রেলওয়ের অভ্যন্তরীণ কারণে কাজের বিল না পেয়ে প্রকল্পের গতি সচল রাখার জন্য তারা বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বড় অংকের ঋণ গ্রহণ করেছে।
সিআরইসি জানিয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃক প্রতিটি ইন্টেরিম বা অন্তর্বর্র্তীকালীন পেমেন্ট (আইপি) সম্পন্ন করতে তাদের প্রত্যাশার তুলনায় অনেক বেশি সময় লেগেছে। উদাহরণ হিসেবে তারা বলছে, সিআরইসি জুন-সেপ্টেম্বর ২০২০ সময়কালের প্রকল্প ব্যয়ের জন্য আইপিসেভেন জমা দেয় ২৭ অক্টোবর, ২০২০ তারিখে। কিন্তু বাংলাদেশ রেলওয়ে ব্যয়ের বৈদেশিক অংশের নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে চীন এক্সিম ব্যাংককে নির্দেশনা দিতে ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ পর্যন্ত কালক্ষেপণ করে, যখন অন্যদিকে প্রকল্পের স্থানীয় ব্যয়ের অংশটুকুও বাংলাদেশ রেলওয়ের যথাযথ পরিকল্পনা ও সমন্বয়ের অভাবে আটকে রয়েছে।
বকেয়া মোট অর্থের পরিমাণ প্রায় ৪শ মিলিয়ন মার্কিন ডলারে গিয়ে ঠেকেছে। এমতাবস্থায়, প্রকল্পের কাজের জন্য প্রয়োজনীয় নির্মাণসামগ্রী কেনা এবং সাবকন্ট্রাকটর ও সাপ্লায়ারদেরকে সময়মতো তাদের পাওনা টাকা পরিশোধ করা সিআরইসির জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। ফলে প্রকল্প বাস্তবায়নের গতিও কমে এসেছে।
সিআরইসির মতে, ২০২০ সালের জুলাইয়ের মধ্যে তাদের ১০০ কোচ সরবরাহের কথা থাকলেও বাংলাদেশ রেলওয়ে এখনো পর্যন্ত কোচগুলো নির্মাণের কোনো নির্দেশনা দেয়নি।
সিআরইসির পক্ষ থেকে একাধিকবার বাংলাদেশ রেলওয়েকে জানানো হয়েছে, এই কোচগুলো নির্মিত ও হস্তান্তর হতে দুই বছর সময় লাগবে। কোভিড-১৯ মহামারির কঠিন সময়ের মধ্য দিয়েও সিআরইসি পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের কাজ যথাসম্ভব নিরবচ্ছিন্নভাবে চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে। কিন্তু এজন্য সম্পৃক্ত প্রতিটি অংশীদারের পক্ষ থেকে যথাযথ সহযোগিতা সিআরইসির একান্ত কাম্য।
তবে পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্প পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) প্রকৌশলী গোলাম ফখরুদ্দিন এ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ৪০ কোটি ডলার পাবে এমন তথ্য ঠিক নয়। তাদের দাবি ভুল। প্রকল্পের অগ্রগতিসহ সব কিছু ঠিক মতো চলছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১
এমআইএস