জামালপুর: নির্মাণ কাজ শুরু হওয়ার ১৫ মাসের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও আড়াই বছরেও শেষ হয়নি সড়কের নির্মাণ কাজ। আড়াই বছরের মাথায় শেষ হয়েছে মাত্র ৪৫ ভাগ কাজ।
২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ভিডিও কনফারন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাস্তাটি মেরামত ও প্রসস্তকরণের কাজ উদ্বোধন করেন।
জামালপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সাদ্দাম হোসেন বাংলাননিউজকে জানান, শেরপুর থেকে ধানুয়া কামালপুর পর্যন্ত ৫৮ কিলোমিটার সড়কের প্রশস্তকরণ এবং কার্পেটিংয়ের জন্য চারটি প্যাকেজে দরপত্র আহ্বান করে সড়ক বিভাগ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩৩৫ কোটি টাকার এ কাজ শুরু হয় গত বছরের অক্টোবর মাসে। চারটি প্যাকেজে প্রথম অংশের ১৫ কিলোমিটার অংশের কাজ মেসার্স এমএম বিল্ডার্স, দ্বিতীয় অংশের কাজ শামীশ অ্যান্ড তুর্না এন্টারপ্রাইজ, তৃতীয় অংশের কাজ পায় মের্সাসন এমএম বিল্ডার্স ও শেষ অংশের কাজ পায় মের্সাস তমা এন্টারপ্রাইজ।
এর মধ্যে, তৃতীয় অংশের কাজ কিছুটা হলেও বাকি অংশের কাজের গতি অত্যন্ত ধীরগতিতে হচ্ছে। বারবার তাগিদ দেওয়া স্বত্বেও ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে না। সঠিক সময়ে কাজ করতে না পারলে এসব ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া কথাও জানান তিনি।
এদিকে, জামালপুরের সঙ্গে বকশীগঞ্জ উপজেলার একমাত্র রাস্তা এটি। সংস্কারের শুরুতেই রাস্তা খোঁড়াখুঁড়ির কারণে রাস্তাটি এখন যানচলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সওজের জামালপুর বিভাগ সূত্রে জানা যায়, চুক্তি অনুযায়ী চলতি বছরের জুন মাসের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সময়সীমা বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে শেষ করতে না পারায় সওজ কর্তৃপক্ষ আগামী বছরের জুন মাস পর্যন্ত সময় বাড়ায়। তৃতীয় দফা সময় বাড়ানোর পর কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪৫ ভাগ।
এলাকাবাসী জানায়, এ সড়ক দিয়ে শেরপুর সদর থেকে স্বল্প দূরত্বে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার কামালপুর স্থলবন্দর এবং কুড়িগ্রামের রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলায় যাওয়া যায়। এ সড়কে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার হালকা ও ভারী যানবাহন চলাচল করে। সড়কের দুই পাশে ছয়টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, একাধিক বাজার, চালকল, করাতকল, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
শেরপুর জেলা সদরের নন্দীর বাজার থেকে কামালপুর পর্যন্ত সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন দুই থেকে তিন হাজার যানবাহন চলাচল করে। সড়কের দুই পাশে আছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বাজারসহ অসংখ্য স্থাপনা। কিন্তু এক বছর ধরে সড়কটির কাজ ফেলে রেখে দিয়েছেন ঠিকাদারেরা। এখন ছোট-বড় অসংখ্য গর্তে ভরে গেছে সড়ক। হাজারো মানুষের চরম দুর্ভোগ ও ভোগান্তি পোহাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নন্দীর বাজার-ফুলকার চর সড়কটির অধিকাংশ স্থানে পিচ উঠে ইট বের হয়ে গেছে। ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কোনো কোনো স্থান দেবে গেছে। রাস্তা সংস্কারে ধীরগতির কারণে স্থানীয় বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন বিব্রত ও ক্ষুব্দ।
এ বিষয়ে বকশীগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুনমুন জাহান লিজা বাংলানিউজকে জানান, দাপ্তারিক কাজের জন্য প্রায়ই সময়ই জেলা সদরে যেতে হয়। এই রাস্তা দিয়ে যাওয়া আসা করা খুবই কঠিন। জামালপুর জেলা শহরে যেতে গেলে পাশ্ববর্তী শেরপুর বা দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার উপর দিয়ে যেতে হয়। এতে প্রায় ৩০ মিনিটি সময় ও ২৫ কিলোমিটার রাস্তা বেশি পাড়ি দিতে হয়।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমএম বিল্ডার্সের স্থানীয় ব্যবস্থাপক বোরহান উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতি, অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে নির্মাণ সামগ্রী যথাসময়ে আমদানি করা যায়নি। কর্তৃপক্ষ সময় বাড়িয়েছে। আশা করা যায় নির্ধারিত সময়ে সড়কের কাজ শেষ করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২১
এনটি