ঢাকা: রাজধানীর পিলখানায় সংঘটিত বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ডে শহীদ সদস্যদের ১২তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) বাদ জুমা পিলখানা বিজিবি কেন্দ্রীয় মসজিদ, ঢাকা সেক্টর মসজিদ ও বর্ডার গার্ড হাসপাতাল মসজিদে এ বিশেষ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
দোয়া ও মিলাদ মাহফিলে অংশগ্রহণ শেষে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মোস্তফা কামাল উদ্দিন বলেন, বিডিআর বিদ্রোহের মতো ঘটনা যেন পুনরাবৃত্তি না হয় সেভাবে আমরা সতর্ক আছি। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি কতিপয় উশৃঙ্খল সদস্য কর্তৃক বিশাল এক হত্যাযজ্ঞ সংগঠিত হয়। যে হত্যাযজ্ঞে দেশের ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা শাহাদত বরণ করেছিলেন। তাদের পরিবারের যারা জীবিত আছেন তাদের সবার মঙ্গল কামনা করছি। আর যারা শহীদ হয়েছেন তাদের বেহেস্ত নসিব হোক।
তিনি বলেন, বিজিবি সারাদেশের বর্ডারগুলো পাহাড়া দেয়। এ বিশাল সীমান্ত এলাকার চোরাচালান বন্ধ করতে, বিভিন্ন সন্ত্রাসী আগমন নির্গমন রোধে, অস্ত্র মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে তারা আন্তরিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছেন। বিজিবি বর্তমানে ত্রিমাত্রিক বাহিনীতে পরিণত হয়েছে। ভবিষ্যতে তারা আরও দেশপ্রেম ও মনোবল নিয়ে কাজ করবে।
বিডিয়ার বিদ্রোহের পর নেপথ্যে কারা রয়েছে, আদালত তা উৎঘাটনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে একটি কমিশন গঠন করতে বলেন মোস্তফা কামাল উদ্দিন।
কমিশনের কার্যাক্রমের অগ্রগতি সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিশন গঠনের পরেই তো তাদের সাধারণ আদালতে বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। যারা দোষী তাদের শাস্তি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যদি অন্য কেউ জড়িত থাকে তাদের আমরা খুঁজে বের করার চেষ্টা করব।
দোয়া ও মিলাদ মাহফিল শেষে বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সাফিনুল ইসলাম বলেন, আজকে একটা বিশেষ দিন। প্রতিটা বাহিনীতেই কিছু কিছু ঘটনা ঘটে। যেটা থেকে আমরা ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা নেই। অনুরূপভাবে ২০০৯ সালে যেটা ঘটেছিল সেটা থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্ডার গার্ড সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আরও সুশৃঙ্খল, সুসঙ্গত ও উচ্চমান সম্পন্ন বাহিনীতে পরিণত হয়েছে।
বর্ডার গাড বাংলাদেশ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন অনেক উঁচু মনোবলের, অনেক সুশৃঙ্খল। এছাড়া বাহিনীর সুযোগ-সুবিধাও অনেকাংশে বেড়েছে। বেতন বেড়েছে, পদোন্নতি হয়েছে বলেও জানান তিনি।
২০০৯ সালের এদিনে তৎকালীন বিডিআরের (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় সংঘটিত হয় বর্বরোচিত হত্যাকাণ্ড। নির্দয় জওয়ানদের গুলিতে প্রাণ যায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তার। ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি দুই দিনব্যাপী চলা এ বিদ্রোহে মোট প্রাণ হারান ৭৪ জন।
বহুল আলোচিত এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় (পিলখানা হত্যা মামলা) ১৩৯ জনকে ফাঁসি, ১৮৫ জনকে যাবজ্জীবন ও ২০০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় মামলা হিসেবে পরিচিত এটি। দীর্ঘ বিচার ও রায় শেষে ২০২০ সালের ৮ জানুয়ারি পিলখানা হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
পিএম/আরবি