গাজীপুর: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাশিমপুর কারাগারে বন্দি লেখক মুশতাক আহমেদের (৫৩) মরদেহ তার স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ময়নাতদন্ত ও সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পুলিশ মরদেহ নিহতের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে।
মুশতাক আহমেদের মৃত্যুর খবর পেয়ে সকালে মর্গে তার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধুরা আসেন। মর্গের সামনে তারা কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং আহাজারি করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, বেলা ১১টায় গাজীপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. অসিউজ্জামান চৌধুরী মলদেহের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করেন। এরপর গাজীপুর ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক মো. সাফি মোহাইমেন মরদেহ ময়নাতদন্তের কাজ শেষ করেন। পরে দুপুরে মরদেহ তার চাচাতো ভাই নাফিসুর রহমানসহ অন্য স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে পুলিশ।
সকালে হাসপাতালের সামনে অবস্থান করেন লেখক মুশতাকের কাছের বন্ধু এবং একই মামলার আসামি দিদারুল ভূইয়া। তিনি মুশতাকের মরদেহ দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
তিনি বলেন, আমিসহ মুশতাক ও কিশোর কেরাণীগঞ্জ কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলাম। এরপর সেখান থেকে কাশিমপুর নিয়ে আসে তাকে। কাশিমপুর এসে আমাদের আলাদা করে রাখা হয়। যে কারণে মুশতাকের সঙ্গে দেখা হয়নি। এভাবে লাশ দেখতে হবে কখনো ভাবতে পারিনি।
দিদারুল ভূইয়া আরও বলেন, এই দেশে কেউ স্বাধীন নয়। হয়তো মিডিয়ার সামনে কথা বললে আরেকটা মামলা খেয়ে যাবো। তাই আর বেশি কথা বলতে চাই না।
তিনি জানান, বাদ আছর মুশতাকের মরদেহ মিনা মসজিদ সি ব্লক, লালমাটিয়া নিয়ে যাওয়া হবে। এরপর আজিমপুরে দাফন হবে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. অসিউজ্জামান চৌধুরী বলেন, মরদেহ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়নি।
কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. গিয়াস উদ্দিন জানান, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন লেখক মুশতাক আহমেদ (৫৩)। বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কারাগারের ভেতর অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রাত সোয়া ৮টার দিকে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১২, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
আরএস/এএ