মেহেরপুর: দেশে বড় বড় দুর্নীতি ও চুরির কোনো বিচার না হলেও গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রান্নাঘরের কিছু চাল চুরি যাওয়ার অপরাধে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. হামিদুল ইসলামকে প্রধান করে জৈষ্ঠ সেবিকা রাফিজা খাতুন ও ইপিআই টেকনিশিয়ান আব্দুর রশিদের সমন্বয়ে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) এ কমিটি গঠন করা হয়। পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দেওয়ায় নির্দেশ দিয়েছেন কর্তৃপক্ষকে।
এর আগে, ২০ ফেব্রুয়ারি দুপুরে হাসপাতালের রাঁধুনি লাইলী খাতুন বালতিতে ভরে পঁচাবাসি ভাতের সঙ্গে কিছু চাল নিয়ে যাওয়ার সময় অফিস সহকারী আসাদুজ্জামান লিটন ধরে ফেলেন। পরে ঠিকাদার ইমরান হাবিব তার বিচারের দাবিতে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. রিয়াজুল আলম।
তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. হামিদুল ইসলাম জানান, প্রাথমিকভাবে রোগীর খাদ্যের ঠিকাদার ইমরান হাবিব ও অভিযুক্ত রাঁধুনি লাইলী খাতুনের বক্তব্য নিয়েছি। আরো কয়েকজনের বক্তব্য নিয়ে আগামী শনিবার বা রোববারে প্রতিবেদন দেব।
ঠিকাদার ইমরান হাবিব জানান, চলতি মাস থেকে আমি ঠিকাদারীর দায়িত্ব নিয়েছি। এই ২৬ দিনে হাসপাতালের রাঁধুনি লাইলী খাতুন প্রায় ৬০ কেজি চাল চুরি করেছেন। আমি দুইদিন লাইলী খাতুনের চাল চুরি হাতে নাতে ধরেছি। তিনি আমার হাত ধরে মাফ চেয়েছেন। অবশেষে হাসপাতালের স্টাফকে দিয়ে গত দিনে প্রায় পাঁচ কেজি চাল হাতে নাতে ধরা পড়ে। এ নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার বরাবর আবেদন করেছি।
অভিযুক্ত লাইলী খাতুন জানান, ঠিকাদার প্রতিদিনই খাবারের জিনিসপত্র কম দেই। আমি বিষয়টি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা স্যারকে (পরিবার ও পরিকল্পনা অফিসার) জানিয়েছি। প্রতিদিন যেসব উপকরণ কম দেয় সেগুলো খাতায় লিখে রাখার জন্য বলেছেন। এ নিয়ে ঠিকাদার ইমরানের সঙ্গে আমার বাকবিতণ্ডা হয়েছে। তবে চাল চুরির বিষয়ে বলেছেন, আমি চাল চুরি করিনি। রান্না ঘরের হাড়িতে থাকা কিছু চালের মধ্যে বিড়ালে মল ত্যাগ করে ফেলেছিল। সেই নোংরা চালগুলো রোগীদের জন্য রান্না না করে আমি পঁচা ভাতের সঙ্গে ছাগলের জন্য বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছিলাম। সেগুলো দাঁড়ি পাল্লায় মাপলে ৩-৪ কেজি হবে হয়তো। ছাগলের খাবার হিসেবেই ব্যবহৃত হতো ওগুলো। তারপরেও আমি স্যারের কাছে মাফ চেয়েছি। কিন্তু তারপরেও আমার বিরুদ্ধে এসব করছেন স্যার।
গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা ডা. রিয়াজুল আলম জানান, রান্নাঘর থেকে চাল চুরি, এবার কোনো ছাড় নয়। জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর এই চাল চুরির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০২১
এনটি