রংপুর: রংপুরে আড়াই বছর আগে আত্মহত্যা করে মারা যাওয়া দুই বোনই ধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত প্রতিবেশী মেরাজুল ইসলাম বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
তিনি জানিয়েছেন, দুজনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে দুজনকেই ধর্ষণ করেছেন। পরে বিষয়টি দুই বোনের কাছে জানানানি হলে তারা একসঙ্গে আত্মহত্যা করেন। ময়নাতদন্ত রিপোর্টেও ধর্ষণের প্রমাণ মিলেছে।
শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি রংপুর কোতোয়ালি থানার শেখপাড়া গ্রামের আপন দুই খালাতো বোন সাদিয়া আক্তার অন্নি (১৫) ও লুৎফন নাহার লাতুল (১৪) বিষপানে আত্মহত্যা করে। তখন এ ঘটনায় এলাকায় আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং চাঞ্চল্যকর ঘটনা হিসেবে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়।
তৎকালীন রংপুর কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে মামলা করা হলে থানা পুলিশ দীর্ঘ আড়াই বছর তদন্তের পর মামলার তদন্তভার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দেওয়া হয়। পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেনের নেতৃত্বে তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক যতীন্দ্রনাথ শর্মা প্রায় এক বছরের বেশি তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করে। এর তথ্যপ্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে আত্মহত্যা প্ররোচনা দেওয়ায় একই গ্রামের আনছার আলীর ছেলে মেরাজুল ইসলামকে (২২) গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায়। এরপর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন মেরাজুল।
স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি থেকে জানা যায়, মেরাজুল একসঙ্গে দুই খালাতো বোনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং তাদের দুজনের সঙ্গেই শারীরিক সম্পর্ক করেন। বিষয়টি দুই বোন জানতে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ে। পরে তারা একই সময় তাদের নানার বাড়িতে বিষপানে আত্মহত্যা করেন। এ ঘটনায় রংপুর মেট্টোপলিটন তাজহাট থানায় দায়ের করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর-৪৪।
রংপুর মেডিক্যালের ফরেনসিক বিভাগ থেকে ভিকটিমদ্বয়ের আত্মহত্যার পূর্বে ধর্ষিতা হওয়ার বিষয়ে মতামত পাওয়া গেছে এবং মামলাটির তদন্ত অব্যহত আছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
ওএইচ/