ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এখনও ঝুঁকিপূর্ণ

শামীম খান, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা এখনও ঝুঁকিপূর্ণ ...

ঢাকা: চলমান করোনা সংকটের মধ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি বলে মনে করছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা। বর্তমানে করোনা ভাইরাসের সংক্রণের হার কমে এলেও পরিস্থিতি এখনও ঝুঁকিপূর্ণ রয়ে গেছে বলে তারা মনে করছেন।

বিশ্বজুড়ে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছর মার্চ থেকে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত বছর ৮ মার্চ বাাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর সংক্রমণ বাড়তে থাকলে ১৭ মার্চ সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে করোনার সংক্রমণ কমতে শুরু করলেও পরিস্থিতি এখনও স্বাভাবিক হয়নি।

এই পরিস্থিতির মধ্যেই কোনো কোনো দিক থেকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার তাগিদ আসছে, দাবিও তোলা হচ্ছে। পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে আন্দোলনেও নেমে পড়েছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম স্থগিতের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ করেন বিভিন্ন সরকারি কলেজের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থীরা।

বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে শিক্ষার্থীরা তিন দিনের আলটিমেটামও দিয়েছেন। স্কুল-কলেজ খুলে দেওয়ার দাবিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচিও পালিত হয়েছে।

এদিকে আগামী ২৪ মে থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে স্কুল-কলেজের বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সরকার সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল-কলেজসহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছে সরকার। তবে এই মুহূর্তেই খুলে দেওয়া ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে। এখনও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে আসেনি। কোনো কোনো দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে ওই সব দেশ পুনরায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়। এই পরিস্থিতিতে সরকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তের আগে গভীরভাবে চিন্তা-ভাবনা করছে।

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় লেখা পড়া বিঘ্নিত হচ্ছে—এ বিষয়ও সরকারকে ভাবতে হচ্ছে। আবার একজন শিক্ষার্থীর জীবন নিয়েও সরকারকে গভীরভাবে ভাবতে হচ্ছে। কারণ, এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়, করোনা সংক্রমণের ঝুঁকির মধ্যেই রয়েছে দেশ। এখন হয়তো অনেকেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু খুলে দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হলে তখন সরকারের ওপরই দায় দেওয়া হবে।

আওয়ামী লীগ নেতাদের মতে, করোনার প্রাদুর্ভাব অনেকটাই কমে এসেছে, ধারণা করা হচ্ছে আগামী কিছু দিনের মধ্যে আরও কমে আসবে। সামনে রোজার মাস আসছে। এই সময়ে এমনিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকে। তাই এই মুহূর্তে না খুলে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হলে ঈদের পর চিন্তা-ভাবনা করা যেতে পারে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, করোনার সংক্রমণ কমে এলেও এখনও ঝুঁকি রয়েছে। কোনো কোনো দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পর শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হলে আবার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আমাদের দেশে এখন যারা খুলে দেওয়ার কথা বলছেন, খুলে দেওয়ার পর একটা বাচ্চা আক্রান্ত হলে তখন তারাই বলবেন—কেন খোলা হলো? বাচ্চারা আক্রান্ত হলে তখন তার দায় কে নেবে? তাই আরও কিছু দিন অপেক্ষা করা উচিত বলে আমি মনে করি।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, এই মুহূর্তেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করি না। এখনও মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে। তবে যেহেতু পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, সংক্রমণ কমে আসছে তাই আগামী ঈদ পর্যন্ত দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে। শুনেছি সরকারও এ রকম ভাবছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।