ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পরিসংখ্যানের গড়মিলে ধান-চালের দাম বেশি: মন্ত্রী

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
পরিসংখ্যানের গড়মিলে ধান-চালের দাম বেশি: মন্ত্রী

ঢাকা: সাম্প্রতিক সময়ে আলু ও ধান-চালের দাম বৃদ্ধির প্রসঙ্গ টেনে কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমার মনে হয়—দেশে এগুলোর আবাদ, উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতার (একর প্রতি) যে পরিসংখ্যান রয়েছে, তা সঠিক নয়। পরিসংখ্যানের গড়মিলের কারণেই আলু ও ধান-চালের দাম বেশি ছিল।

শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে জাতীয় পরিসংখ্যান দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

সঠিক ও প্রকৃত তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে নির্ভরযোগ্য ও মানসম্পন্ন পরিসংখ্যান প্রস্তুতের জন্য নিজস্ব দেশীয় পদ্ধতি (মেথড) উদ্ভাবনের জন্য পরিসংখ্যানবিদ ও বিবিএসের কর্মকর্তাদের আহ্বান জানান কৃষিমন্ত্রী। একই সঙ্গে বাস্তবতার আলোকে সংগৃহীত তথ্যের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণের জন্যও আহ্বান জানান তিনি।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়নে প্রয়োজন সঠিক ও সময়োপযোগী পরিসংখ্যান। জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও জনগণের জীবনমান উন্নয়নে যে কোনো ধরনের ইতিবাচক কৌশল গ্রহণে সময়োপযোগী ও গুণগত মানসম্পন্ন পরিসংখ্যানই কার্যকর দিকনির্দেশনা দিতে পারে। কিন্তু বিবিএসের জন্য সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা অনেক কঠিন। নির্ভরযোগ্য তথ্য কীভাবে সংগ্রহ করা যায় সে উপায় পরিসংখ্যানবিদ ও বিবিএসের কর্মকর্তাদের খুঁজে বের করতে হবে। ইউরোপ, আমেরিকা বা পশ্চিমা বিশ্বে যে পদ্ধতিতে (মেথড) তথ্য সংগ্রহ করে, তা আমাদের দেশে কতটুকু কার্যকর তা খতিয়ে দেখা দরকার। দেশের বৃহৎ জনগোষ্ঠী, জনগণের শিক্ষা, সামাজিক ও মানসিক অবস্থাকে বিবেচনায় নিয়ে কীভাবে সঠিক তথ্য সংগ্রহ করা যায়—সে রকম নিজস্ব পদ্ধতি উদ্ভাবন করতে হবে। একইসাথে, বাস্তবতার আলোকে সংগৃহীত তথ্যের পর্যালোচনা ও বিশ্লেষণ করতে হবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষে দেশে প্রথমবারের মতো ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস’ পালিত হয়েছে। পরিসংখ্যানের গুরুত্বকে সবার কাছে তুলে ধরতেই বিবিএসের এ আয়োজন। এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘নির্ভরযোগ্য পরিসংখ্যান, টেকসই উন্নয়নের উপাদান’। এখন থেকে প্রতি বছর ২৭ ফেব্রুয়ারি পালিত হবে ‘জাতীয় পরিসংখ্যান দিবস’।

ড. রাজ্জাক আরও বলেন, কৃষিখাতে সঠিক তথ্য খুবই দরকার। বিভিন্ন খাদ্যপণ্য বছরে কতটুকু উৎপাদিত হচ্ছে, চাহিদা কতটুকু বা উৎপাদন বছরে কতটুকু বাড়ছে—এসবের প্রকৃত ও সঠিক তথ্য দরকার। সেটি করতে পারলে ভবিষ্যত পরিকল্পনা প্রণয়ন অনেক ভালো ও সহজতর হবে। অন্যদিকে, দেশে দারিদ্র্যের হারসহ অন্যান্য বিষয় ও উন্নয়নের গতি প্রবৃদ্ধি নিয়েও কেউ প্রশ্ন তুলতে পারবে না।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সমিতির সভাপতি ড. পি কে মো. মতিউর রহমান ও গেস্ট অব অনার হিসেবে ইউনিসেফ বাংলাদেশ প্রতিনিধি টোমো হোজুমি উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান সমিতির সভাপতি ড. পিকে মো. মতিউর রহমান বলেন, দেশে নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহে অনেক বাধা রয়েছে। সঠিক তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে সামাজিক, মানসিক ও পারিবারিকসহ কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে। এসব সীমাবদ্ধবতা মোকাবিলা করে নির্ভরযোগ্য তথ্য সংগ্রহ করা খুবই চ্যালেঞ্জিং। সেজন্য, তথ্য প্রদানকারীর সচেতনতা সবচেয়ে জরুরি।

সভায় জানান হয়, বিবিএস জরিপের ক্ষেত্রে তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধিতে কাজ করছে। জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২১ হবে সম্পূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক বা ই- সেন্সাস। কম্পিউটার অ্যাসিসস্টেড পার্সোনাল ইন্টারভিউ (সিএপিআই) ব্যবহৃত হবে এই সেন্সাসে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
এমআইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।