ঢাকা: আমার স্বামী মহিউদ্দিনই আমার তিন বছরের শিশু সন্তানকে হত্যা করেছেন। তাকে স্বামী বলতে আমার ঘৃণা করছে।
শুক্রবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে নিহত শিশু তানজিনার মা জরিনা বেগম সন্তানের মৃত্যুর খবর পেয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ছুটে এসে কাঁদতে কাঁদতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
জরিনা বেগম জানান, হবিগঞ্জের মাধবপুরে মায়ের বাড়িতে থাকে তার দুই ছেলে। তিনি তার ছোট মেয়ে তানজিনাকে নিয়ে বনানী কড়াইল বস্তিতে থেকে গার্মেন্টসে চাকরি করেন। আর তার স্বামী মহিউদ্দিন বনানীর একটি খাবার হোটেলে চাকরি করেন। থাকেন সেই হোটেলেই। তিনি নিয়মিত কাজে যেতেন না এবং তিনি সংসারের খরচ দিতেন না। গত ১০ থেকে ১২ দিন ধরে মহিউদ্দিন তার সঙ্গেই ছিলেন। বাসায় থাকলে সারাক্ষণ তিনি আমার সঙ্গে ঝগড়া করতেন।
তিনি জানান, সকালে ঝগড়া হওয়ার এক পর্যায়ে তিনি বাসা থেকে বেরিয়ে তার এক আত্মীয়ের বাসায় যান। এর কিছুক্ষণ পর তিনি স্বামী মহিউদ্দিনের মোবাইল নম্বরে কল দিয়ে মেয়ে তানজিনার খবর জানতে চান। এ সময় মহিউদ্দিন বলেন, তানজিনা সিঁড়ি থেকে পড়ে গেছে। তাকে ঢামেক হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ খবর শুনে তিনি হাসপাতালে ছুটে গিয়ে মেয়ের মরদেহ দেখতে পান।
জরিনা আরও জানান, গত সাত মাস আগে তিনি মহিউদ্দিনকে বিয়ে করেছেন। তার আগের স্বামী গত আড়াই বছর আগে তাকে ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি কোথায় আছেন তা তিনি জানেন না।
এ বিষয়ে বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরে আজম মিয়া বাংলানিউজকে জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে সৎ বাবা মহিউদ্দিনের হাতে শিশু তানজিনা হত্যার শিকার হয়েছে। আরও ধারণা করা হচ্ছে তানজিনাকে ধর্ষণ করা হয়েছে। আটক মহিউদ্দিনকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে হত্যার কারণ জানা যাবে।
এর আগে বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বনানীর কড়াইল বস্তি থেকে শিশু তানজিনাকে অচেতন অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বাংলানিউজকে জানান, শিশু তানজিনার গালে কামড়ের দাগ ও যৌনাঙ্গে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা তার বাবা মহিউদ্দিনকে আটক করা হয়েছে। তার কথাবার্তা সন্দেহজনক। বিষয়টি বনানী থানাকে অবগত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
এজেডএস/আরআইএস