ঢাকা: ‘তুই থাকতে ঝগড়া হয় কীভাবে? এই কথা বলাই কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলো কলেজছাত্র কাজল গাজীর (১৯)। এমনটাই দাবি করছেন মৃত কাজলের চাচা ফারুক গাজী।
শনিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর আফতাবনগর দাউকান্দি বাঘাপুর এলাকায় বাংলানিউজকে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুক গাজী বলেন, ছোটদের গণ্ডগোলের সমঝোতা করতে গিয়ে আমার ভাতিজা কাজল হামলার শিকার হয়েছে। কাজল ইমনকে বলে ‘তুই’ থাকতে ঝগড়া হয় কীভাবে? ‘গ্যাংস্টারের’ ইমন কাজলকে বলে ‘তুই’ কী এখানে বড় ভাই সাজতে এসেছিস? এ কথা বলাই ইমন পেছন থেকে রড ও লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করেন কাজলকে। এর পরপরই তিনটি আঘাত করেন তার মাথায়।
মৃত কাজলের বাবা কামাল গাজী বলেন, আমার ছেলে কাজল গুলশান কমার্স কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলো। আপনারা আমার ছেলের সম্পর্কে এলাকাবাসীর সবাইকে জিজ্ঞেস করেন যে, আমার ছেলে কেমন খারাপ না ভালো। আমার ছেলে খারাপ ছেলেদের সঙ্গে ছিলো না। সবাই ভালো বলবে। আমার ছেলেকে প্রাণে মেরেছে, ওরা নিজেদের ‘গ্যাংস্টারের লিডার’ বলে দাবি করে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে হুমকি দিয়েছে জাফর আহম্মেদ ইমন, আতিক হাসান রাব্বি, সাগর, পাপ্পু, ইকবাল, হালিম।
তিনি বলেন, আমার বাপ-চাচারা এখনো দুনিয়ায় জীবিত আছেন। আমার ছেলে নেই। যদি ছেলে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যেতো। অথবা কোনো রোগে মারা যেতো, আমি সহ্য করে নিতাম। ওরা আমার ছেলেকে প্রাণে মেরে ফেললো। এই শোক আমি সইবো কী করে? ওদের সবার শাস্তি চাই ও ফাঁসি চাই। মামলার বিষয়ে কাজলের বাবা বলেন, ঘটনার দিন উল্টো আমার ছেলের নামে বাড্ডা থানায় লুটপাটের মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমার ছেলের ওপর হামলা হওয়ার পরদিন মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আমি বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি মামলা দায়ের করি। এখন পর্যন্ত আমার ছেলের হত্যাকারীরা একজনও গ্রেফতার হয়নি। এজাহার অনুযায়ী আসামিরা হলেন- মো. গোলাম রাব্বী (২২), মো. সাগর (২৪), মো. জাফর আহমেদ ইমন (২০), মো. ইকবাল হোসেন (৪০), রেজাউল করিম পাপ্পু (৩২), মো. হালিম (৩৬), মো. মামুন (৩৮), মো. আবুল হোসেন (৫০)।
এর আগে সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আফতাবনগরে বটতলার মোড়ে ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে সিনিয়র-জুনিয়র দুই গ্রুপের কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে দ্বন্দ্বে জড়ান কাজল। সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় দুই গ্রুপের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। কথিত গ্যাংস্টার গ্রুপের প্রধান ইমন, রাব্বী, সাগর, পাপ্পু রড ও লাঠি দিয়ে কাজলের ওপর হামলা করেন। এতে কাজল গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করে। শুক্রবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সাড়ে ৫টায় ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান কাজল।
বাড্ডা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, হত্যাকারীদের গ্রেফতারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে। মামলার আইউ ভুক্তভোগীর স্বজনদের নিয়ে প্রতিদিনই আসামিদের খুঁজছে। ডিবিসহ আমাদের অন্য সংস্থা এই মামলায় কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২১
এমএমআই/এএটি