ঢাকা: সরকারের পাশাপাশি বিত্তবানদের শিক্ষা সহায়তা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
এসময় ১ কোটি ৬৩ লাখ ৮০০ শিক্ষার্থীর মধ্যে ৮৭ কোটি ৫২ লাখ টাকার শিক্ষা সহায়তা প্রদান কার্যক্রম উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের মাধ্যমে সারাদেশের লাখ লাখ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি। আমরা শিক্ষিত ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর। এক্ষেত্রে বিত্তবানরা এগিয়ে আসুন। আমাদের শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ডে সহায়তা করবেন বা নিজ নিজ এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সহায়তা করবেন।
‘নিজে যে প্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছেন, সেটার উন্নয়নে ও সেখানকার শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসলেই তো হয়। ’
শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে এই ট্রাস্ট গঠনের উদ্যোগ নিই। ২০১২ সালে এটি প্রতিষ্ঠা করি। এর মাধ্যমে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে উপবৃত্তি, টিউশন ফি, ভর্তি সহায়তা ও চিকিৎসা অনুদান দেওয়া হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষায় ফেলোশিপ দেওয়া হচ্ছে।
দক্ষ নাগরিক গড়তে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরে সরকার প্রধান বলেন, বাংলাদেশ আজকে উন্নয়নশীল দেশ। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে আমরা যে স্বীকৃতি পেয়েছি সেটা আমাদের ধরে রাখতে হবে এবং ধরে রাখার জন্যই দরকার শিক্ষার প্রসার এবং উপযুক্ত দক্ষ কারিগর এবং নাগরিক। সেই দক্ষ ও উপযুক্ত নাগরিক আমরা গড়ে তুলতে বদ্ধ পরিকর।
যুগোপযোগী শিক্ষা নিশ্চিতে সরকার কাজ করছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আমি মনে করি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিক্ষা বা কারিগরি শিক্ষা এটাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এটা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। এটা শুধু দেশে না বিদেশেও। আর আমাদের দেশে এজন্যই প্রয়োজন। আমি ১শটা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। সেখানে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ হচ্ছে। সেখানে অনেক কারিগরি লোক লাগবে। দক্ষ জনশক্তির প্রয়োজন হবে। কাজেই সেই দক্ষ জনশক্তি আমরা সৃষ্টি করতে চাই। দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করলে আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা ব্যাপক অবদানও রাখতে পারবে।
তিনি বলেন, আধুনিক যুগে কি কি ধরনের বিষয় লাগে সেদিকে লক্ষ্য রেখেই কিন্তু আমি বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে যাচ্ছি। আমরা মেরিটাইম বিশ্ববিদ্যালয় করেছি, আমরা সিভিল অ্যাভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস বিশ্ববিদ্যালয় করেছি অর্থাৎ সাবজেক্টগুলো আমরা দেখে দেখে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় যে এলাকায় যে ধরনের শিক্ষার খুব বেশি গুরুত্ব আমরা সেইভাবেই কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়গুলো করে দিচ্ছি। এজন্য যে সকলেই যেন শিক্ষাটা যথাযথভাবে গ্রহণ করতে পারে।
উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলা, সুনামগঞ্জের বিশম্বরপুর উপজেলা, চট্টগ্রামের বান্দরবান সদরের উপকারভোগী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে সচিবালয় প্রান্তে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, উপমন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান।
গণভবন প্রান্ত থেকে অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০২১
এমইউএম/এইচএডি/