ঢাকা: দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাধ্যতামূলক করতে হবে বলে উল্লেখ করেছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।
মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সোমবার (১ মার্চ) বিকেলে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি আয়োজিত ‘মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা সংরক্ষণ ও বিকাশ: সরকার ও নাগরিক সমাজের করণীয়’ শীর্ষক এক আন্তর্জাতিক ওয়েবিনারে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোজাম্মেল হক বলেন, ইতিহাসে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বগাথার পাশাপাশি পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের সহযোগীদের নৃশংসতার বিবরণ সমানভাবে থাকতে হবে। সব পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ বাধ্যতামূলক করতে হবে। পাশাপাশি পাঠ্যসূচিতে ৫০ নম্বর মুক্তিযুদ্ধের গৌরবগাথা এবং ৫০ নম্বর থাকতে হবে প্রতিপক্ষের ও মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের ভয়াবহতা ও নৃশংসতার কথা। এর ফলে তরুণ প্রজন্ম বুঝতে পারবে তারা কোনো পক্ষে থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বিসিএস প্রশ্নপত্রে মুক্তিযুদ্ধের প্রতিপক্ষের ইতিহাসের ওপর প্রশ্ন অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় না। দশম শ্রেণি পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত বাধ্যতামূলক করতে হবে। মাঠে অ্যাসেম্বলির জায়গা না থাকলে শ্রেণিকক্ষে নিজ নিজ স্থানে দাঁড়িয়ে শিক্ষার্থীদের জাতীয় সংগীত গাইতে হবে। শুধু আইন নয়, এ বিষয়ে জনমত গঠন করতে হবে। এক্ষেত্রে নির্মূল কমিটি অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। তারা এ বিষয়ে অনেক প্রকাশনা ও তথ্যচিত্র প্রকাশ করেছে।
ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবির।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সাম্মানিক সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, নির্মূল কমিটির সহ-সভাপতি শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) কাজী সাজ্জাদ আলী জহির বীরপ্রতীক, নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ডা. আমজাদ হোসেন, মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ভাষাসংগ্রামী ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের পৌত্রী এবং সংসদ সদস্য অ্যারোমা দত্ত, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি লেখক গবেষক মফিদুল হক, নির্মূল কমিটির সহসভাপতি শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট ও গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক লেখক মারুফ রসুল, নির্মূল কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল প্রমুখ।
সভায় মুক্তিযোদ্ধা এবং মুক্তিযুদ্ধে শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা পাঠ প্রাথমিকস্তর থেকে স্নাতকোত্তর পর্যন্ত সব পর্যায়ে বাধ্যতামূলক করতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীকে বিশেষভাবে উদ্যোগ নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।
ওয়েবমিনারে বলা হয়, কওমি মাদরাসায় জাতীয় সংগীত গাওয়া হারাম বলে ফতোয়া দেওয়া হচ্ছে, অধিকাংশ মাদরাসায় জাতীয় পতাকাও ওড়ানো হয় না। সব প্রাথমিক, মাধ্যমিক প্রতিষ্ঠানে জাতীয় সংগীত গাওয়া এবং জাতীয় পতাকা উত্তোলন বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২১
আরকেআর/ওএইচ/