নড়াইল: একবার-দুবার নয়। নড়াইলে সপ্তমবারের মতো ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আজিজুর রহমান ভূঁইয়া।
গত ১১ নভেম্বর দ্বিতীয় দফা ইউপি নির্বাচনে নড়াইল সদর উপজেলার ৩ নং চণ্ডিবরপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে বিপুল ভোটে জয় পেয়েছেন তিনি।
এর আগে দুবার জেলার শ্রেষ্ঠ চেয়ারম্যান হিসেবে ভূষিত হয়েছিলেন আজিজুর রহমান। পেয়েছেন স্বর্ণপদকও। সব মিলিয়ে গত ৩২ বছর ধরে তিনি চণ্ডিবরপুর ইউপিতে চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করছেন।
ভোটাররা জানিয়েছেন, এলাকার মানুষের কাছে আজিজুর রহমান সৎ ও ন্যায়পরায়ণ চেয়ারম্যান হিসেবে পরিচিত। মূলত এ কারণেই তিনি বার বার নির্বাচিত হচ্ছেন।
এ বিষয়ে আজিজুর রহমান বলেন, আমি সবসময় চেষ্টা করি সুখে-দুঃখে এলাকাবাসীর পাশে থাকতে। এ বিজয় তারই প্রতিদান। আমি ইউনিয়নবাসীর কাছে চিরকৃতজ্ঞ।
জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি আজিজুর রহমানের স্বপ্ন ছিল সমাজসেবা করা। মানুষের জন্য কাজ করার তাগিদ থেকে ১৯৭৭ সালে তরুণ বয়সে ইউপি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেন। সে বছর সামান্য ভোটের জন্য জয় অধরা থাকলেও ১৯৮৩ সালে পরবর্তী নির্বাচনে তিনি প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।
চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষের প্রতি তার মমত্ববোধ, আন্তরিকতা ও কর্তব্যপরায়ণতা তাকে জনপ্রিয় করে তোলে।
আজিজুর রহমানের জন্ম নড়াইল সদর উপজেলার সিমানন্দপুর গ্রামে, ১৯৫২ সালের ১৮ মে। পিতা তোবারেক হোসেন ভূঁইয়া ও মাতা রওশন আরা বেগমের বড় ছেলে তিনি। ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ার সময় বাবাকে হারিয়েছেন। এরপর ভাইবোনদের নিয়ে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছেন। কিন্তু সমাজের প্রতি দায়িত্ব পালন থেকে একটুও বিচ্যুত হননি। গড়ে তুলেছেন আজিজুর রহমান বালিকা এতিমখানা, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মহাবিদ্যালয়, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সিমানন্দপুর দাখিল মাদ্রাসা এবং বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ শেখ গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর।
আজিজুর রহমান সম্পর্কে জানতে চাইলে রাজাপুর গ্রামের ভ্যান চালক লিচু শেখ বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়ের মাস্টার্স পর্যন্ত পড়ালেখার যাবতীয় খরচ চেয়ারম্যান সাহেব দিয়েছেন। এছাড়া পরিবারের চিকিৎসা খরচ এবং মেয়ের বিয়েতেও সাহায্য করেছেন তিনি।
চালিতাতলা বাজারের পান দোকানি তাপস কুমার সমাদ্দার বাংলানিউজকে বলেন, ছোটকাল থেকে আমরা উনাকে দেখে আসছি। উনার কারণে এলাকায় কারো ক্ষতি হতে দেখিনি। উনি ছোট-বড় সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করেন।
পাইকমারি গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোল্যা কওছার উদ্দিন বলেন, পত্রপত্রিকায় দেখি অমুক ইউপি চেয়ারম্যানের নামে চাল-গম, রাস্তার টাকা মারার দায়ে মামলা হয়েছে। অথচ আমাদের চেয়ারম্যান ৩২ বছর ধরে কাজ করছে। তার নামে কোনও মামলা হয়নি। তিনি মানুষের উপকার ছাড়া কারো ক্ষতি করেননি। কোনো সম্যসায় পড়লে আমরা তাকে কাছে পাই। চাকুরি, পাসপোর্টের ভেরিফিকেশন করতে কখনো কষ্ট হয়নি। ইউনিয়ন পরিষদের কোনো সেবা পেতে টাকা দিতে হয়নি। সরকারির বরাদ্দের বাইরেও তিনি গরীব মানুষের সেবা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২১
এনএসআর