খুলনা: করোনাভাইরাসের কারণে এবারও সুন্দরবনের দুবলা চরে হচ্ছে না ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব। তবে নির্দিষ্ট সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের জন্য পুণ্যস্নান বা রাস পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রতি বছরের মতো এবারও রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত সুন্দরবনের দুবলারচরে তিন দিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী ‘রাস পূর্ণিমা পূজা ও পুণ্যস্নান’ অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে পুণ্যস্নানে নিরাপদে যাতায়াতের জন্য দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীদের জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ পাঁচটি পথ নির্ধারণ করেছে। এসব পথে তীর্থযাত্রী ও দর্শনার্থীদের জানমালের নিরাপত্তায় বন বিভাগ, পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড সদস্যরা টহলে নিয়োজিত থাকবে।
অনুমোদিত পাঁচটি রুট হলো- বুড়িগোয়ালিনী, কোবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা খাল হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলারচর। কয়রা, কাশিয়াবাদ, খাসিটানা, বজবজা হয়ে আড়ুয়া শিবসা-শিবসা-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী অথবা চাঁদপাই স্টেশন-তিনকোনা দ্বীপ হয়ে দুবলার চর এবং বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।
পূর্ণিমা পুণ্যস্নানে কেবল তিন দিনের জন্য সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অনুমতি দেওয়া হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে এবং মাস্কবিহীন কোন তীর্থযাত্রীকে পুণ্যস্নানস্থলে যেতে দেওয়া হবে না। অনুষ্ঠান স্থলে পর্যাপ্ত পরিমাণ স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী হ্যান্ডস্যানিটাইজার ও হ্যান্ডওয়াস রাখা হবে।
তীর্থযাত্রীদের আগামী ১৭ থেকে ১৯ নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নির্দিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। যাত্রীরা নির্ধারিত রুটের পছন্দমতো একটি মাত্র পথ ব্যবহারের সুযোগ পাবেন এবং দিনের বেলায় চলাচল করতে পারবেন। বনবিভাগের চেকিং পয়েন্ট ছাড়া অন্য কোথাও নৌকা, লঞ্চ বা ট্রলার থামানো যাবে না। প্রতিটি ট্রলারের গায়ে রং দিয়ে বিএলসি অথবা সিরিয়াল নম্বর লিখতে হবে। রাস পূর্ণিমায় আগত পুণ্যার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট হতে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু, শব্দযন্ত্র বাজানো, পটকা ও বাজি ফোটানো, বিস্ফোরক দ্রব্য, দেশীয় যে কোন অস্ত্র এবং আগ্নেয়াস্ত্র, হরিন মারার ফাঁদ, কুড়াল, দড়ি বহন করা থেকে যাত্রীদের বিরত থাকতে হবে। সুন্দরবনের অভ্যন্তরে অবস্থানকালীন সবসময় টোকেন ও টিকেট নিজের সঙ্গে রাখতে হবে। প্রতিটি লঞ্চ, নৌকা ও ট্রলার-কে আলোরকোলে অবস্থিত কন্ট্রোলরুমে আবশ্যিকভাবে রিপোর্ট করতে হবে।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৪, ২০২১
এমআরএম/এমএমজেড