ঢাকা: নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি জলমহাল ইজারার জন্য অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে রোববার (১৪ নভেম্বর) এ সংক্রান্ত পরিপত্র জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে বলা হয়, সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি, ২০০৯ অনুযায়ী নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি জলমহাল ইজারা পাওয়ার লক্ষ্যে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য ভূমি মন্ত্রণালয়ে এবং সাধারণ আবেদনের ক্ষেত্রে জেলা উপজেলায় আবেদন দাখিল করে।
‘কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিদ্যমান পদ্ধতিতে আবেদন দাখিল করায় আবেদনের সঙ্গে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল না করা হলে বাছাইকালে আবেদন বাতিল করা হয়। বাতিল করা আবেদনের বিষয়ে আবেদনকারী সমিতি থেকে কাগজ দাখিল করেছে মর্মে অভিযোগ দায়ের করে পরবর্তীতে আবেদন বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। ’
এছাড়া জলমহাল ইজারা নেওয়ার জন্য প্রতিযোগিতা, একাধিক সমিতির আবেদন দাখিলে নানাবিধ জটিলতার উদ্ভব ঘটছে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে।
ভূমি ব্যবস্থাপনায় ডিজিটাল পদক্ষেপ হিসেবে সায়রাত মহালসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে অনলাইনে ডাটাবেজ তৈরি সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে পরিপত্রে বলা হয়, অনলাইনে ই-নামজারিসহ ভূমি উন্নয়ন কর দেওয়ার প্রক্রিয়া চালু হয়েছে।
জলমহাল ইজারার আবেদন গ্রহণের প্রক্রিয়া অনলাইনে চালু হলে জলমহাল ইজারার আবেদন দাখিলসহ ইজারা প্রক্রিয়ার জটিলতা নিরসন সম্ভব হবে। এ অবস্থা নিরসনের জন্য জলমহাল ইজারার আবেদন অনলাইনে দাখিল এবং ইজারা প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সরকারি জলমহাল ব্যবস্থাপনা নীতি অনুযায়ী বদ্ধ জলমহাল ইজারা গ্রহণে আগ্রহী নিবন্ধিত ও প্রকৃত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতি প্রয়োজনীয় তথ্য ও দলিলাদিসহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনলাইনে ইজারার জন্য আবেদন দাখিল করতে পারবে। অনলাইনে আবেদন দাখিল সংক্রান্ত নির্দেশিকা অনুযায়ী নিবন্ধিত মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি/সম্পাদককে মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে অথবা jm.lams.gov.bd লিংকে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করে অনলাইনে আবেদন দাখিল করতে হবে। এ সংক্রান্ত নির্দেশিকা এ ওয়েবসাইটে আপলোড করা হয়েছে।
উন্নয়ন প্রকল্পে জলমহাল ইজারার জন্য অনলাইনে আবেদন দাখিলের শেষ সময়সীমা ৩০ অগ্রহায়ণ (১৫ ডিসেম্বর) অফিস চলাকাল পর্যন্ত। সাধারণ আবেদন এবং উপজেলা থেকে ইজারার ক্ষেত্রে নীতিতে বর্ণিত সময়সীমা প্রযোজ্য হবে। অনলাইনে আবেদন দাখিলের পর আবেদনে বর্ণিত তথ্যাদির গোপনীয়তা প্রযুক্তিগতভাবে আবেদন দাখিলের শেষ সময়সীমা পর্যন্ত সংরক্ষণ করা হবে। তবে দাখিলকারী আবেদন দাখিলের পর আবেদনের সকল তথ্যাদির প্রিন্টিং কপি সংগ্রহ করতে পারবে।
অনলাইনে আবেদন দাখিলের শেষ সময়সীমার পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে আবেদনের সকল তথ্যাদির প্রিন্টিং কপিসহ জলমহাল ইজারার জন্য জামানতের ব্যাংক ড্রাফট/পে-অর্ডারের মুলকপি সিলগালা মুখবন্ধ খামে সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলায় দাখিল করতে হবে। সীলগালা করা উল্লিখিত খামের উপরিভাগে ‘জলমহাল ইজারা প্রাপ্তির জন্য আবেদন’ কথাগুলো স্পষ্টভাবে লিখতে হবে এবং খামের বামপার্শ্বে নিম্নভাগে সমিতির নাম ও ঠিকানা লিখিত থাকতে হবে।
নির্ধারিত সময়-সীমার মধ্যে অনলাইনে দাখিল করা সকল আবেদন সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা যাচাই বাছাই করে উন্নয়ন প্রকল্পের ক্ষেত্রে জেলা জলমহাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সুপারিশ এবং নির্ধারিত ছকে জলমহালের তথ্যাদিসহ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবে। জেলা এবং উপজেলা থেকে ইজারার ক্ষেত্রে নীতিতে বর্ণিত নির্ধারিত পদ্ধতিতে যাচাই বাছাই করবে।
অনলাইনে দাখিল করা তথ্যাদি এবং প্রিন্টিং কপি হিসেবে দাখিল করা তথ্যাদির মধ্যে তারতম্য থাকলে অনলাইনের তথ্যাদি সঠিক বলে বিবেচিত হবে। সরকারের এ সিদ্ধান্ত যথাযথভাবে প্রকাশ ও প্রচারের ব্যবস্থা নিতে সব জেলা প্রশাসককে পরিপত্রে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ