ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হরেক রকম ভর্তা সমেত গরম চিতই

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮২৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
হরেক রকম ভর্তা সমেত গরম চিতই চিতই পিঠার সঙ্গে ভর্তা। ছবি: বাংলানিউজ

ফেনী: শীত আসি আসি করেও যেন আসছে না, তাতে কী? ঘাসের ডগায় শিশিরবিন্দু, শহরের মোড়ে মোড়ে পিঠা-পুলির বিক্রির আয়োজনই জানান দেয় শীত সমাগত। শীত রাতের শহরে যে কয়টি পিঠা বিক্রি হয় তার মধ্যে চিতই অন্যতম।

সরষে, মরিচ, শুঁটকিসহ হরেক রকমের ভর্তা দিয়ে এ পিঠা তৃপ্তির সঙ্গে খেতে পছন্দ করেন ভোজনরিসকরা।

সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাতে ফেনী শহরের বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে মানুষের জটলা দেখে থমকে দাঁড়াতে হলো, কাছে যেতেই দেখা গেল চিতই পিঠা বানানো হচ্ছে সেখানে।

ক্রেতারা বেশ মজা করেই খাচ্ছেন। বিক্রেতাও মহাব্যস্ত, তিনজন মিলেও সামাল দেওয়া যেন দায় হয়ে পড়েছে। পিঠা বিক্রেতা ফুল মিয়া এসেছেন উত্তর বঙ্গের গাইবান্ধা থেকে। তার আরও দুই ভাইসহ প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে রাত ১২টা অবধি চলে তাদের বিকি-কিনি।

আলাপচারিতার একপর্যায়ে ফুল মিয়া বাংলানিউজকে জানলেন, প্রতিদিন  ৮শ থেকে ১ হাজার পিস পিঠা বিক্রি করেন তারা। মানুষ আগ্রহ নিয়ে খায়। ব্যবসায় লাভও ভালো।

কথা হয় পিঠা খেতে আসা সাংবাদিক দুলাল তালুকদারের সঙ্গে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, গ্রামের বাড়িতেও চিতই তৈরি হয়।  কিন্তু হরেক রকমের ভর্তা পাওয়া যায় না।

মীর হোসেন রাসেল নামে আরেকজন জানালেন, চিতই পিঠা তো ঘরেও তৈরি হয়। তবে, ভর্তার এত বাহারি আয়োজন থাকে না। সরষে, মরিচ ভর্তা আর পেঁয়াজ-রসুন ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠার মজাই আলাদা।

কথা হয় বিক্রেতা মো. ফুল মিয়ার সঙ্গে, প্রতি শীতের মৌসুমে চিতই পিঠা বিক্রি করতেই তিনি গাইবান্ধা থেকে ফেনী আসেন। মৌসুম শেষে আবার বাড়ি ফিরে যান।

ফুল মিয়া বলেন, বেশ ভালোই পিঠা বিক্রি হয়। শহরের সব শ্রেণি ও পেশার মানুষই তার দোকানে পিঠা খেতে আসে। প্রতিদিন বিকেল ৪টা থেকে বসে রাত ১০টা পর্যন্ত পিঠা বিক্রি করেন। এ সময়ের মধ্যে প্রায় ১ হাজার টাকার পিঠা বিক্রি হয়। মজুরিসহ সব মিলিয়ে ৬শ টাকা খরচের পর লাভ থাকে ৫শ থেকে ৬শ টাকা। প্রতিটি পিঠা বিক্রি করা হয় ৫ টাকায়। শীত জেঁকে বসলে দৈনিক ২ হাজার পিস পিঠাও বিক্রি হয়েছে অন্যান্য বছর। ফুল মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ক্রেতারা এসব ভর্তা দিয়ে চিতই পিঠা খেতে খুবই পছন্দ করেন। তার সঙ্গে কথা বলে জানা যায় চিতই পিঠা বানানোর প্রক্রিয়াও। চালের আটা পানিতে গুলিয়ে গরম তাওয়াতে ভেজে এই পিঠা তৈরি হয়। পিঠা তৈরির জন্য আটা ও পানির মিশ্রণ অল্প তাপে মাটির খোলায় বা কড়াইতে ভাজতে হয়। শীতকালের খুব জনপ্রিয় এ পিঠাটি। তৈরি হওয়ার পর খোলা থেকে নামিয়ে খেতে পারেন খেজুরের গুড় অথবা বিভিন্ন রকম ভর্তা দিয়ে। এছাড়াও শহরের অলি-গলিতে ভাপা পিঠা, খোলাঝালি পিঠা, পাটি সাপটা পিঠাসহ নানা স্বাদের পিঠার পসরা সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারাও আগ্রহ নিয়ে খাচ্ছেন সেসব।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
এসএইচডি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।