ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ভাঙা হচ্ছে শতবর্ষী ৬ ভবন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
ভাঙা হচ্ছে শতবর্ষী ৬ ভবন

বরিশাল: বিভাগের প্রথম হাসপাতাল প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯১০ সালে। বিভিন্ন জনের দানে গড়ে ওঠা সেই বরিশাল জেনারেল (সদর) হাসপাতালের ছয়টি পুরনো ভবন ভেঙে ফেলা হচ্ছে।

গত এক সপ্তাহ ধরে চলছে ভবনগুলো ভাঙার কাজ। বরিশালের নাগরিক সমাজ পুরনো ভবনের আদলে নতুন ভবন তৈরি করে পুরনো ভবনের ফলক, ভাস্কর্য ও নামলিপি সংরক্ষণের দাবি জানিয়েছে। অনেকেই মনে করেন কর্তৃপক্ষ সচেতন হলে পুরনো ভবন সংস্কার করেই হাসপাতালের কার্যক্রম চালাতে পারতো।

সদর হাসপাতালের সামনে স্থাপিত ফলক দেখে জানা যায়, লেফটেন্যান্ট গভর্নর স্যার ল্যান্সলট হেয়ার ১৯১০ সালের ৫ ডিসেম্বর ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং বাংলার গভর্নর লর্ড কারমাইকেল ১৯১২ সালের ১৩ জুলাই হাসপাতাল ভবনটি উদ্বোধন করেন।

কয়েকজন সম্ভ্রান্ত পৃথকভাবে কয়েকটি ভবনের নির্মাণ ব্যয় বহন করেছেন। এর মধ্যে ১৯২৫ সালে বাইসারির ইন্দ্রনাথ দত্ত তাঁর মা গোলকমনির নামে লেবার ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। ১৯৩৩ সালে ঈশ্বরচন্দ্র সেন আলোকমনি মহিলা ওয়ার্ড প্রতিষ্ঠা করেন। কালীচন্দ্র ১৯৩৮ সালে শশীমুখী অপারেশন থিয়েটার নির্মাণ করেন। ১৯৩৬ সালে জ্ঞানচন্দ্র ঘোষ দস্তিদার কলেরা ওয়ার্ড নির্মাণ করেন। ১৯৩৮ সালে জমিদার বিনয় গুপ্ত তার বাবার নামে জগত চন্দ্র পেয়িংপুরুষ ওয়ার্ড এবং ব্যারিস্টার নলিনী গুপ্ত তার মা মুক্তাকেশীর নামে একটি নারী পেয়িং ওয়ার্ড নির্মাণ করেন।



গত শুক্রবার (১২ নভেম্বর) হাসপাতালটিতে গিয়ে দেখা গেছে নির্মাণ শ্রমিকরা হাসপাতালের দুটি ভবনের ছাদ ইতোমধ্যে ভেঙে ফেলেছেন, মুক্তাকেশী ফিমেল পেয়িং ওয়ার্ডে মুক্তাকেশীর প্রায় শতবর্ষী শ্বেত পাথরের ভাস্কর্য থাকা দেয়ালটি ভাঙার অপেক্ষায়। দাতাদের নামফলক খুলে রাখা হয়েছে।

হাসপাতালটি ১৯১০ সালে স্থাপিত হলেও এর ভবনগুলির অধিকাংশ ১৯৩৮ সালে নির্মিত হয়, যা ঠিকমতো সংস্কার করা হলে ব্যবহারযোগ্য করা যেতো বলে মনে করেন হাসপাতালের সাবেক আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ড. মিজানুর রহমান।

হাসপাতালের বর্তমান আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. মলয় কৃষ্ণ বড়াল জানান, আমরা পুরনো ভবনের ছবি ও ভিডিও করে রেখেছি, যা নতুন ভবনে স্থাপন করা হবে। ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বহুতল ভবন নির্মাণ করা হবে। সেখানে নামফলকগুলি একটি কক্ষে স্থাপন করবো।

সিভিল সার্জন ডা. মনোয়ার হোসেন জানান, দুই মাসের মধ্যে পুরনো ভবন ভেঙে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হবে। প্রায় ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়টি ভবন ভেঙে ফেলার কাজ চলছে। এখানে বহুতল ভবন নির্মাণ হবে। তবে এখানে এমন জায়গা ছিল না, যেখানে নতুন ভবন নির্মাণ করা যায়। তবে নাগরিকদের নিয়ে পুরনো রেপ্লিকা সংরক্ষণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৫, ২০২১
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।