বাগেরহাট: বাগেরহাটের মোংলা বন্দরে কয়লা বোঝাই কার্গো ডুবির ঘটনার ২০ ঘণ্টা পরও সন্ধান মেলেনি নিখোঁজ পাঁচ নাবিকের।  

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বিকেল পর্যন্ত ডুবে যাওয়া জাহাজ উদ্ধারেও কাজ শুরু করেনি মালিকপক্ষ।

এর আগে সোমবার (১৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৯টায় বন্দরের হারবাড়িায়ার-৯ নম্বর বয়া এলাকায় পানামা পতাকাবাহী জাহাজ হ্যান্ডিপার্কের ধাক্কায় ডুবে যায় কয়লা বোঝাই কার্গো এম ভি ফারদিন-১। এতে ওই জাহাজে থাকা সাত নাবিকের মধ্যে পাঁচ নাবিক ডুবে যায়। এখন পর্যন্ত ওই নাবিকরা নিখোঁজ রয়েছে।

নিখোঁজ নাবিকরা হলেন- পিরোজপুর জেলার সৌরভকাঠি উপজেলার বোটমাস্টার মহিউদ্দিন, একই এলাকার রবিউল, নূর আলম, ভাণ্ডারিয়া উপজেলার জিহাদ, এবং মোংলা এলাকার সামসু।

উদ্ধার হওয়া নাবিকরা হলেন- পিরোজপুর জেলার ভাণ্ডারিয়া উপজেলার পাইটখালী গ্রামের রায়হান চৌধুরী, বাগেরহাট জেলার মোংলা উপজেলার মাকরডোন নারিকেল তলা এলাকার মো. রুবল।

উদ্ধার হওয়া নাবিক রায়হান চৌধুরী বলেন, আমরা কয়লা নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ করে মাদার ভ্যাসেল আমাদের কার্গোটিকে ধাক্কা দিলে মুহূর্তের মধ্যে আমাদের কার্গোটি ডুবে যায়।

মোংলাস্থ শ্রমিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেসার্স টি হকের সুপারভাইজার মো. লোকমান হোসেন বলেন, বন্দরে অবস্থানরত বিদেশি জাহাজ ‘এলিনা বি’ থেকে ৩৫০ টন কয়লা নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছিল কার্গো জাহাজ ফারদিন-১। পণ্য খালাস শেষে পানামা পতাকাবাহী হ্যান্ডিপার্ক জাহাজ (মাদার ভেসেল) বন্দর ত্যাগ করার সময় বিপরীত থেকে আসা কয়লা বোঝাই কার্গো জাহাজটিকে ধাক্কা দেয়। এতে ওই কার্গোটি ডুবে যায়। এসময় অন্য একটি লঞ্চ এসে কার্গোতে থাকা সাতজনের মধ্যে দুইজনকে উদ্ধার করলেও পাঁচ জন নাবিক এখনো নিখোঁজ রয়েছেন।  

মাল্টা পতাকাবাহী বিদেশি জাহাজ এলিনা বি’র স্থানীয় শিপিং এজেন্ট টগি শিপিংয়ের ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজ বলেন, সুপারভাইজার লোকমান হোসেনের কাছ থেকে দুর্ঘটনার খবর শুনেছি। নিখোঁজ নাবিককে উদ্ধারে কোস্টগার্ড অভিযান শুরু করেছে।

কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন, মোংলার মিডিয়া কর্মকর্তা লে. খন্দকার মুনিফ তকি বলেন, খরব পেয়ে রাতেই কোস্টগার্ডের সদস্যরা ওই এলাকায় পৌঁছায়। নিখোঁজ পাঁচ নাবিককে উদ্ধারের জন্য অভিযান শুরু করা হয়েছে। বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত আমরা পাঁচ নাবিকের কাউকে খুঁজে পাইনি। নিখোঁজ নাবিকদের উদ্ধারে কোস্টগার্ডের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
 
কমান্ডার শেখ ফখরউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ শিপিং আইন অনুযায়ী ডুবে যাওয়া বলগেটটির বাণিজ্যিক পণ্য পরিবহনের অনুমতি ছিল না। তারা বেআইনিভাবে কয়লা পরিবহন করেছে। এসব বিষয়ে বলগেট মালিকদের আরও বেশি সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দেন বন্দরের এই কর্মকর্তা।

গত ৮ অক্টোবর সার নিয়ে বন্দরের পশুর নদীতে এবং ৯ অক্টোবর পাথর নিয়ে ফেয়ারওয়ে বয়া এলাকায় দুইটি কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনা ঘটে।

** মোংলায় বিদেশি জাহাজের ধাক্কায় কার্গো ডুবি, নিখোঁজ ৩

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৬, ২০২১
আরএ