দিনাজপুর: দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বিয়ের আশ্বাসে পরকীয়ায় জড়িয়ে প্রেমিক বিয়ে না করায় তার নাতিকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট পৌর এলাকার হঠাৎপাড়া গ্রামের জিয়ারুল ইসলাম (৫২)। বিভিন্ন এলাকায় ভিক্ষা করাই তার পেশা। পার্শ্ববর্তী গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার গোবিন্দপুর-কালিতলা গ্রামের নুর জামালের স্ত্রী রিপা বেগমের (২৬) সঙ্গে তার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
জিয়ারুল দীর্ঘদিন থেকে রিপা বেগমকে বিয়ে করার আশ্বাস দিয়েও শেষ পর্যন্ত বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় রিপা বেগম কৌশলে গত সোমবার (১৫ নভেম্বর) বিকেলে জিয়ারুলের বাড়িতে লালিত-পালিত হওয়া নাতি জিম বাবুকে (৩) অপহরণ করে নিয়ে যান।
অপহরণ হওয়া শিশু জিমের বাবা-মা নিম্নবিত্ত হওয়ায় তারা দীর্ঘদিন থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরে অবস্থান করে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। আর তাদের শিশু সন্তান জিম বাবু ঘোড়াঘাটে তার নানী বাড়িতে থাকে।
শিশু জিম নানী বাড়ি থেকে নিখোঁজ হবার পর অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে না পেয়ে বুধবার রাতে সন্দেহভাজন কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে ঘোড়াঘাট থানায় একটি জিডি করে শিশুটির বাবা জহুরুল ইসলাম।
জিডির সূত্র ধরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় শিশু অপহরণের সঙ্গে জড়িত এক নারীর অবস্থান শনাক্ত করে ঘোড়াঘাট থানা পুলিশ। পরে গত বুধবার (১৭ নভেম্বর) ঘোড়াঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খোকন চাকীর নেতৃত্বে থানা পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে রাত সাড়ে ১১টায় গাইবান্ধা জেলার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার চড়কতলা বাজার এলাকা থেকে রিপা বেগমকে (২৬) গ্রেফতার করে। এ সময় তার কাছে থেকে অপহরণ হওয়া শিশু জিম বাবুকে উদ্ধার করে পুলিশ।
ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু হাসান কবির বলেন, অপহরণকারী আসামি এবং ভিকটিমের নানা মাদকাসক্ত। একসঙ্গে মাদক সেবনের সুবাদে তাদের দুজনের ভালো সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। বিয়ে করার প্রতিশ্রুতি দিয়েও ভিকটিমের নানা জিয়ারুল ইসলাম আসামি রিপা বেগমকে বিয়ে না করায় তিনি শিশুটিকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। তাদের মাদক সেবনের বিষয়টি ভিকটিমের আপন নানী আমেনা বেগম আমাদেরকে নিশ্চিত করেছে। আসামির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করে বৃহস্পতিবার দুপুরে দিনাজপুরের বিজ্ঞ আদালতে পাঠানো হয়। বিচারক তার জামিন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
এনটি