ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে টেকনোলজিস্টের নামে মামলা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতে টেকনোলজিস্টের নামে মামলা

খুলনা: ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে করোনা টেস্টের ২ কোটি ৫৭ লাখ ৫৭ হাজার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাতের ঘটনায় টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) প্ৰকাশ কুমার দাসের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থার উপসহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান এ মামলা করেন।

দুদকের উপপরিচালক (জনসংযোগ) মুহাম্মদ আরিফ সাদেক বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক খন্দকার কামরুজ্জামান জানান, করোনা রোগীদের পরীক্ষা ও বিদেশগামী যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ফি আদায়ের দায়িত্বে ছিলেন ল্যাব টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাস। তিনি ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত ৪ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা ফি আদায় করেন। কিন্তু সরকারি কোষাগারে জমা দেন ১ কোটি ৬৬ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০ টাকা। অবশিষ্ট ২ কোটি ৫৮ লাখ ৯৭ হাজার ২০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

বিষয়টি জানার পর খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদ গত ২৭ সেপ্টেম্বর খুলনা সদর থানায় জিডি করেন। এছাড়া জিডির কপিসহ দুদকে লিখিত অভিযোগ করেন। এরপর প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদন নিয়ে বৃহস্পতিবার দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক বাদী হয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

গত সেপ্টেম্বর মাস থেকে প্রকাশ কুমার দাস কর্মস্থলে অনুপস্থিত এবং আত্মগোপনে রয়েছেন। এই আত্মসাতের সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত আছেন কিনা এবং আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ আরও বেশি কিনা তা দুদক তদন্ত করে দেখবে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রকাশ কুমার দাস খুলনার ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের করোনা পরীক্ষার ইউজার ফি গ্রহণ করার দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে ২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুলাই পর্যন্ত মোট ৪ কোটি ২৪ লাখ ৯৩ হাজার ৯০০ টাকা আদায় করেন। এর মধ্যে তিনি ১ কোটি ৬৬ লাখ ৯৬ হাজার ৭০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেন। তবে বাকি ২ কোটি ৫৭ লাখ ৯৭ হাজার ২০০ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেছেন।

এর আগে আত্মসাতের বিষয়টি সন্দেহ হলে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের সিভিল সার্জন কাম তত্ত্বাবধায়ক ডা. নিয়াজ মোহাম্মদের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সেখানেও অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া যায়। এরপর খুলনা সিভিল সার্জন অফিস থেকে গত ২৭ সেপ্টেম্বর খুলনা থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। ওই জিডির কপিসহ অভিযোগ সংশ্লিষ্ট নথিপত্র যাচাই করে প্রকাশ কুমার দাসের বিরুদ্ধে আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া যায়।

আসামির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।

করোনা শুরুর প্রথম দিকে সদর হাসপাতালে করোনা টেস্টের জন্য সাধারণ মানুষের বাসায় গিয়ে করোনা টেস্টের জন্য শ্যাম্পল কালেকশনের জন্য নেওয়া হতো ১ হাজার টাকা করে এবং হাসপাতালে টেস্টের জন্য নেওয়া হতো ৫০০ টাকা। পরবর্তীতে নেওয়া শুরু হয় ৩০০ ও ৫০০ টাকা। এছাড়া বিদেশগামীদের সাড়ে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৪ হাজার টাকা করোনা টেস্টের জন্য নেওয়া হতো। এসব কিছুর দায়িত্বে ছিলেন ল্যাব ইনচার্জ মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট প্রকাশ কুমার দাস। পাশাপাশি তিনি হাসপাতালের ল্যাব ইনচার্জের দায়িত্ব পালন করতেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০২১
এমআরএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।