পটুয়াখালী: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শত বছরের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব।
শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) সূর্যোদয়ের পর থেকে সমুদ্র তীরে ভগবত গীতা পাঠ, গঙ্গার পূজা অর্চনা, প্রার্থণা ও স্নান করে পরিবার, দেশ ও জাতি জন্য আর্শীবাদ কামনা করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
এরআগে, বুধবার (১৭ নভেম্বর) রাত ১২টা এক মিনিটে কুয়াকাটা রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে সতের জোড়া যুগল প্রতিমা দর্শনের মাধ্যমে এ রাস উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়।
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাসমতে সাগর বা নদীতে পূর্ণিমার জোয়ারে স্নানের মাধ্যমে তাদের পূর্বের পাপ মোচন হয়ে যায়। তাই রাসের সবচেয়ে বড় উদ্দেশ্য হলো গঙ্গায় পুণ্যস্নান। এরআগে সৈকতে মোমবাতি, আগরবাতি, বেল পাতা, ফুল, ধান, দুর্বা, হরিতকী, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্র জলে অর্পণ করে সনাতনী নারীরা। এসময় উলুধ্বনি ও ভগবত গীতা পাঠে মুখরিত হয় ওঠে পুরো সৈকত। এছাড়া মাথান্যাড়াসহ প্রায়শ্চিত্ত ও পিন্ডদান করেন অনেক মানতকারীরা।
হিন্দু সম্প্রদায় ছাড়াও বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের হাজার হাজার মানুষ এ উৎসবে হাজির হয়। এবার করোনার কারণে রাস উৎসবে কোনো মেলার আয়োজন করা হয়নি। এবার শুধু হিন্দু ধর্মালম্বীদের ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় রাস উৎসব পালন করা হয়েছে। তবে এবারও প্রায় লক্ষাধিক সনাতন ধর্মালম্বী রাস উৎসবে অংশ নেন।
এদিকে গঙ্গা স্নানকে কেন্দ্র করে সমুদ্র যেকোনো দুর্ঘটনা ও অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত পুলিশি টহল এবং ফায়ার সার্ভিসের ডুবরি টিম ২৪ ঘণ্টা টানা ডিউটি পালন করছেন। পুণ্যার্থীদের ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতে তাদের টহল চলছেন বলেও জানান ফায়ার সার্ভিস বরিশালের ডুবুরি দলের টিম লিডার হুমায়ুন কবির।
শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির ও তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের মন্দির অধ্যক্ষ ব্রহ্মচারী শিশির মহারাজ জানান, সকল আয়োজন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ, সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ভবিষ্যতেও সৃষ্টি কর্তার কৃপায় করোনা মুক্ত পরিবেশে একটি বড় রাস উৎসবের প্রত্যাশাও করেন তিনি।
পুণ্যস্নানের মাধ্যমে জ্ঞাত-অজ্ঞাত সকল পাপ মোচন হয়ে আবার নিজেকে পরিশোধন করার এরকম সুযোগ বার বার জীবনে আসুক এই প্রার্থণা হাজার হাজার কৃষ্ণ ভক্ত শিশু-নারী-পুরুষের।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২১
এনটি