ঢাকা: নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, এ সরকারের কাছে দাবি করে কোনো কাজ হবে না। এ সরকারকে চাপ দিয়ে দাবি আদায় করতে হবে।
শনিবার (২০ নভেম্বর) বেলা পৌনে বারোটার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপি অফিসের সামনে দলের আয়োজিত গণঅনশন কর্মসূচিতে বক্তব্য দেওয়ার সময় তিনি এ কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবিতে এ গণঅনশন কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
এ সময় মান্না বলেন, আমরা কখনও কল্পনা করতে পারিনি যে এ রকম একটা নিষ্ঠুর হৃদয়হীন সরকার আমাদের দেশে আসতে পারে। যারা এখন ক্ষমতায় বসে আছে। তারা একদিকে নিষ্ঠুর আর একদিকে প্রতারক, আর একদিকে মিথ্যাবাদী। আর সবচাইতে বেশি হলো তারা ভীতু সরকার। তারা বেগম জিয়াকে ভয় পায়। তারা জানে উনি যদি প্রকাশ্যে জনগণের সঙ্গে কথা বলতে পারেন, তাহলে সেই কথায় মানুষ নড়েচড়ে রাজপথ কাপিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী এ জন্যই এতটা মিথ্যা কথা বলছেন, ভোট চুরি করেছেন, ডাকাতি করেছেন। তারপরে টেলিভিশনের সামনে এসে বলেন, এত চমৎকার নির্বাচন করলাম, আর বিরোধীদল মানে না।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে ঘোষণা করেছিলেন দশ টাকা করে চাল খাওয়াবেন। এখন চাল সত্তর টাকা। উনি বলেন, আর কত দাম কমাবো। দাম কমলে কমে দশ টাকা, নয় টাকা, আট টাকা, সাত টাকা হয়। সত্তর টাকা হয়েছে, আর উনি বলছেন দাম কমিয়েছেন। এ জন্যেই আমি বলি এ সরকারের কাছে দাবি পেশ করে খুব লাভ হবে না। এ সরকারকে চাপ দিয়ে দাবি আদায় করতে হবে।
এ সমাবেশে দাঁড়িয়ে আমি দিল্লীর তথা ভারতের কৃষকদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। এত বড় লৌহ মানবের মতো এক নেতা, উনি জনগণের কাছে কড়জোরে ক্ষমা চেয়েছেন এবং কৃষিবিল প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। অপেক্ষা করেন, দিন আসবে যখন আমাদের ইনিও (প্রধানমন্ত্রী) দুই হাত জড়ো করে ক্ষমা চাইবেন, কিন্তু মানুষ ক্ষমা করবে না।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে মান্না বলেন, যত ধরণের বিপর্যয় আসুক আপনারা আজকে যে আন্দোলন করছেন, এ আন্দোলন অব্যাহত রাখুন। এ ধারাবাহিকতায় ব্যাপক মানুষকে এক জায়গায় করে ধীরে ধীরে আন্দোলনকে এমন জায়গায় নিয়ে যেতে হবে যাতে এ স্বৈরাচারের পতন হয়। আমি প্রায়ই বলি আমিতো বিএনপি করি না। হয়তো করবো না, কিন্তু ন্যায়নিষ্ঠ, সত্যনিষ্ঠ একটা নেতার পক্ষে, একটা আদর্শের পক্ষে যেকোনো ধরণের বিপদের ঝুঁকি নিতে প্রস্তুত আছি। আপনাদের পক্ষ থেকে যে কর্মসূচি নেওয়া হোক আমি আমার দলের পক্ষ থেকে আগেই সংহতি প্রকাশ করছি।
তিনি বলেন, আমি মনে করি আজকের কর্মসূচি শেষ কর্মসূচি নয়। যতদিন পর্যন্ত এ সরকারকে সরাতে না পারবেন ততদিন পর্যন্ত এ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে এবং আন্দোলনের প্রতিটা পদক্ষেপে আমরা আপনাদের সঙ্গে থাকবো।
গণঅনশনে আরও বক্তব্য দেন- পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম (বীর প্রতীক), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান ড. ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এলডিপির একাংশের মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ, এলডিপির অপর অংশের মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম, জাগপার একাংশের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব প্রফেসর আব্দুল করিম, ন্যাপ ভাসানীর নেতা অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ড. ওবায়দুল ইসলাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি এম আবদুল্লাহ, মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদির ভূইয়া জুয়েল, মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা শাহ মোহাম্মদ নেছারুল হক, সদস্য সচিব মাওলানা নজরুল ইসলাম তালুকদার, তাঁতী দলের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম মাহতাব, ছাত্রদলের সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
এমএইচ/জেডএ