ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনের কার্যক্রম নিয়ে প্রদর্শনী

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনের কার্যক্রম নিয়ে প্রদর্শনী ছবি: রাজীন চৌধুরী

ঢাকা: ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে দেশে যে গণহত্যা চলে, তার খবর খুব দ্রুতই পৌঁছেছিল লন্ডনে। সে খবরে ২৬ মার্চ ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটের মোড়ে প্রতিবাদ অনশন করেছিলেন দেশটিতে অবস্থানরত ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের দুই কর্মী শামসুদ্দিন আহমদ চৌধুরী মানিক এবং আফরাজ আফগান চৌধুরী।

সেই ছবি উঠে এসেছে ‘ইউকে ১৯৭১: পিপল’স সলিডারাটি উইথ বাংলাদেশ’স লিবারেশন’ শীর্ষক আলোকচিত্র প্রদর্শনীতে।

রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে শুরু হওয়া এ প্রদর্শনীতে উঠে এসেছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে যুক্তরাজ্যে মানুষের আন্দোলনের ৪০টি বিরল ছবি। আর এসব আলোকচিত্র যেন নাটিংহাম-বার্মিংহাম থেকে লন্ডনে বাঙালি অভিবাসী কমিউনিটি সোচ্চার কণ্ঠে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে যেসব কথা বলেছে ও সংহতি প্রকাশ করেছে, তারই নথিপত্র।

শুক্রবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তার সঙ্গে ছিলেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান স্টিভি স্প্রিং সিবিই, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি মফিদুল হক এবং সারা যাকের। বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর এবং বাংলাদেশে ব্রিটিশ কাউন্সিলের কার্যক্রমের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে।


উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ২৫ মার্চ ১৯৭১ পাকবাহিনী গণহত্যাভিযান শুরু করলে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাঙালির প্রতিরোধ রূপ নেয় স্বাধীনতা আন্দোলনে। ব্রিটেনে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদ-প্রতিরোধে নেমে পড়েন অনেক মানুষ, সংগঠিত হয় অনেক ধরনের উদ্যোগ। বার্মিংহামে গঠিত হয় ‘বাংলাদেশ অ্যাকশন কমিটি’, ব্রিটেনপ্রবাসী বাঙালিদের সঙ্গে যোগ দেন আরও অনেক ব্রিটিশ নাগরিক, রাজনৈতিক নেতৃত্ব বাড়িয়ে দেয় সহযোগিতার হাত। একাত্তরে বৃটেনজুড়ে সংহতি কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত পরিচয় কোনো এক প্রদর্শনীতে তুলে ধরা অসম্ভব হলেও এখানে উজ্জ্বল দাসের “লন্ডন ১৯৭১” আর্কাইভ থেকে রজার গোয়েন ও ইউসুফ চৌধুরীর ভালো কিছু ছবি ও সংগৃহীত দলিলপত্র তুলে ধরা হয়েছে।

ব্রিটিশ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান স্টিভি স্প্রিং সিবিই বলেন, আমাদের দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক অনেক গাঢ়। সেই জায়গাটি থেকে আমাদের মধ্যে ইতিহাস এবং সংস্কৃতির বিনিময়ও অনেক বেশি। আমি নিজে ব্যক্তিগতভাবে ফটোগ্রাফিকে অনেক বেশি ভালোবাসি। এটা একটি অসাধারণ মাধ্যম যেখানে ইতিহাসকে ফিরে দেখা যায়। এ প্রদর্শনীতেও সেই বিষয়টি উঠে এসেছে। ফটোগ্রাফি, গান, সংস্কৃতি, এগুলো আমাদের একে অন্যকে বুঝতে অনেক বেশি সাহায্য করবে বলেই আমি মনে করি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে গ্যালারি ঘুরে দেখেন অতিথিরা। এ প্রদর্শনীতে স্থান পেয়েছে ৪০টি আলোকচিত্র। আর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রদর্শনীটি চলবে আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পারস্পারিক সম্পর্কের ইতিহাস উদযাপনে এবং বন্ধুত্বের সম্পর্ক জোরদারে ঢাকায় এসেছেন ব্রিটিশ কাউন্সিলের গ্লোবাল চেয়ারম্যান স্টিভি স্প্রিং সিবিই। বিশ্বজুড়ে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও শিক্ষার সুযোগ নিয়ে কাজ করা যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক সংস্থা ব্রিটিশ কাউন্সিল শিক্ষা-সংস্কৃতি, ইংরেজি ভাষা, শিক্ষার মাধ্যমে যুক্তরাজ্যের জনগণের সঙ্গে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ ও বোঝাপড়ায় আরও বেশি উন্নয়ন হবে বলেই এ প্রদর্শনীতে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
এইচএমএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।