ঢাকা: বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে ২১ নভেম্বর একটি স্মরণীয় দিন। ১৯৭১ সালের এই দিনে তিন বাহিনী সম্মিলিতভাবে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর উপর সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসকে যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে উদযাপন করতে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, দেশের সকল সেনানিবাস, নৌ ঘাঁটি এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটির মসজিদসমূহে সবার কল্যাণ, সমৃদ্ধি এবং সশস্ত্র বাহিনীর উত্তরোত্তর উন্নতি ও অগ্রগতি কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হবে।
মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ২১ নভেম্বর (রোববার) সকালে ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন।
এরপর সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল মোহাম্মদ শাহীন ইকবাল এবং বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চীফ মার্শাল শেখ আব্দুল হান্নান নিজ নিজ বাহিনীর পক্ষ থেকে শিখা অনির্বাণে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন।
তিন বাহিনী প্রধানরা সশস্ত্র বাহিনী বিভাগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এবং বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করবেন।
‘সশস্ত্র বাহিনী দিবস-২০২১’ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে সংযুক্ত থেকে ঢাকা সেনানিবাসস্থ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে বীরশ্রেষ্ঠদের উত্তরাধিকারী এবং নির্বাচিত সংখ্যক খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা প্রদান করবেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী স্বশরীরে উপস্থিত থেকে ০৫ জন সেনা, ০২ জন নৌ এবং ০১ জন বিমান বাহিনী সদস্যদের ২০২০-২০২১ সালের শান্তিকালীন পদকে ভূষিত করবেন।
অনুষ্ঠানে সেনাবাহিনী প্রধান, নৌবাহিনী প্রধান, বিমানবাহিনী প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও), প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ২১ নভেম্বর বিকেল ৪টায় ঢাকা সেনানিবাসস্থ সেনাকুঞ্জে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভিটিসির মাধ্যমে যোগ দিবেন।
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনী প্রধান এবং বিমানবাহিনী প্রধান স্ব-স্ব বাহিনীর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা ও তাঁদের উত্তরাধিকারীদের সংবর্ধনা দিবেন।
এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান ২৩ নভেম্বর খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা/তাঁদের উত্তরাধিকারীদের অনুরূপ সংবর্ধনা দিবেন।
ঢাকা ছাড়াও বরিশাল, কক্সবাজার, বগুড়া, সিলেট, ঘাটাইল, চট্টগ্রাম, যশোর, রংপুর ও খুলনা সেনানিবাস/ঘাঁটিতে সংশ্লিষ্ট এরিয়া সদর দপ্তরের ব্যবস্থাপনায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
এদিকে, দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালনের জন্য ঢাকার বাইরে দেশের অন্যান্য সেনা গ্যারিসন, নৌ জাহাজ/স্থাপনা এবং বিমান বাহিনী ঘাঁটিতেও বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। ঢাকা, খুলনা, চাঁদপুর, বরিশাল ও চট্টগ্রামে বিশেষভাবে সজ্জিত নৌবাহিনী জাহাজসমূহ ২১ নভেম্বর বেলা ২টা থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সর্বসাধারণের দেখার জন্য নিকটস্থ ঘাটে অবস্থান/নোঙর করে রাখা হবে।
সশস্ত্র বাহিনী দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে ২০ নভেম্বর (শনিবার) বাংলাদেশ টেলিভিশন রাত ৮টার বাংলা সংবাদের পর সশস্ত্র বাহিনীর পরিবেশনায় ‘‘বিশেষ অনির্বাণ’’ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। ২১ নভেম্বর (রোববার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বাংলাদেশ বেতার ‘‘বিশেষ দূর্বার’’ সম্প্রচার করবে।
সশস্ত্র বাহিনীর পরিচালনাধীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার (অনলাইন ভিত্তিক) আয়োজন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে শনিবার রাষ্ট্রপতি ও সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক পৃথক বাণী প্রদান করেছেন।
আরও পড়ুন >>>
সশস্ত্র বাহিনী জাতির আস্থার প্রতীক: প্রধানমন্ত্রী
সশস্ত্র বাহিনীর গৌরব সমুন্নত রাখতে হবে: রাষ্ট্রপতি
বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
এমইউএম/কেএআর