বরগুনা: পাঁচ টাকার চিপস কিনলেই দুই থেকে শুরু করে ‘হাজার টাকার নোট’ পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। রয়েছে ৭০ ‘টাকা’র নোটও।
বরগুনার বেতাগী উপজেলায় সম্প্রতি এমন কৌশলেই বিক্রি হচ্ছে নিম্নমানের চিপস।
শুধু তাই নয়, বেতাগীর একটি মসজিদের দানবাক্সে ১০০০ টাকার একটি নমুনা নোট রেখে সমপরিমাণ টাকা নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোকামিয়া দরবার শরীফে গত শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) জুমার নামাজ চলাকালে কেউ মসজিদের দানবাক্সে হাজার টাকার একটি খেলনা (নমুনা) নোট রেখে এর পরিবর্তে সমপরিমাণ টাকা নিয়ে যায়। নামাজ শেষে টাকা গোনার সময় বিষয়টি ধরা পড়ে।
বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিসা বাজারের সিদ্দিকুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, শিশুদের প্রলুব্ধ করে নিম্নমানের চিপস বিক্রি করতে অভিনব এ পন্থা অবলম্বন করছে একাধিক প্রতিষ্ঠান। এরা উপজেলার বিভিন্ন বাজার ও গ্রামাঞ্চলের দোকানগুলোতে বিএসটিআইয়ের অনুমোদনহীন নিম্নমানের খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করছে। সাদা মোড়কে পাঁচ টাকার চিপসের প্যাকেট কিনলেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত নমুনা ১০০০, ৫০০, ২০০, ১০০, ৭০, ৫০ টাকার নোট পাওয়া যাচ্ছে। তবে এগুলো আসল টাকা নয়, নমুনা টাকা। এ খেলনা টাকার লোভে শিশুরা পরিবারের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দোকানে গিয়ে নিম্নমানের চিপস কিনে খাচ্ছে। আবার অনেক শিশু পরিবারের কাউকে না জানিয়ে টাকা পেলেই দোকানে গিয়ে এ চিপস কিনছে।
উপজেলার কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন দোকানে ঠিকানা ছাড়া সাদা পলিথিনে মোড়ানো গোলাকার এ চিপস বিক্রি করা হচ্ছে। সেগুলোর সঙ্গে দেওয়া নোট দেখতে আসল টাকার মতো হলেও টাকার ডান পাশে ছোট অক্ষরে লেখা ‘খেলনা টাকার নমুনা’।
উপজেলার জলিসাহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়া মনি বাংলানিউজকে জানান, খেলনা টাকার জন্যই চিপস কিনি। আমি প্রতিদিন চার-পাঁচ প্যাকেট চিপস কিনি। চিপসের প্যাকেটে টাকার নোটগুলো আমার কাছে অনেক ভালো লাগে।
হোসনাবাদ ইউনিয়নের জলিসা বাজারের সিদ্দিকুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, শিশুরা খেলনা নোটের লোভে চিপস কিনতে দোকানে যাচ্ছে বারবার। এটা খেয়ে বাচ্চাদের পেটে ব্যথা হচ্ছে, গ্যাসের সমস্যাও হচ্ছে। এছাড়া বয়স্ক লোকদের এমন টাকা দিয়ে বিভ্রান্ত করার অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। বৃদ্ধরা টাকার পার্থক্য বুঝতে না পারায় প্রতারিত হচ্ছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
মসজিদের মুসল্লি মো. সাইফুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, মসজিদের দানের টাকা নিয়ে এ রকম প্রতারণা করা ঠিক হয়নি। এ ধরনের নমুনা টাকা যারা বাজারে ছেড়েছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।
উপজেলার জলিসাবাজারের চা দোকানি রহমান আলী বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বাজারে এক লোক গাড়িতে এসে দোকানে দোকানে এ চিপস বিক্রি করে। আমি কোম্পানির ঠিকানা জানি না।
বেতাগী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুহৃদ সালেহীন বলেন, আমি বাজার কমিটির সঙ্গে কথা বলে নাম-ঠিকানাহীন এসব কোম্পানির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
এসআই