ঢাকা: আমরা নিজেদের মতো করে বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করেছি। এখানে যে কেউ বিনিয়োগে আসতে পারেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
রোববার (২১ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর বনানীর শেরাটন হোটেলে সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফআইসিসিআই)।
মান্নান বলেন, আমারা বিনিয়োগের পরিবেশ তৈরি করেছি। এখন যে কেউ বিনিয়োগের জন্য আসতে পারেন। আমরা তাদের স্বাগত জানাবো। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার মাধ্যমে ১৬ কোটি মানুষের স্বপ্ন যেমন পূরণ হয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের সক্ষমতাও প্রমাণিত হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ মেগা প্রকল্পগুলো আগামীর বদলে যাওয়া বাংলাদেশের চিহ্ন।
তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে এগিয়ে চলছি। এখন শুধু কাজ আর কাজ করে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশ গড়ার এ সময়। বাণিজ্য সংগঠনগুলো অ্যাডভোকেসির কাজ করছে। টেকসই অর্থনীতির জন্য আমাদের নতুন নতুন খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। এরমধ্যে অ্যাগ্রো প্রসেসিং শিল্প ও গ্রিন ফাইনান্সিংয়ের দিকে যেতে হবে। আগামীতে প্রযুক্তির ব্যবহার নিশ্চিত করতে ডিজিটাল অবকাঠামো তৈরি হয়েছে। এ সুযোগ কাজে লাগাতে হবে।
সালমান এফ রহমান বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা বদলে দিয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে গ্রামীণ অর্থনীতি প্রসার লাভ করছে। সেইসঙ্গে মধ্যবিত্ত শ্রেণি বাড়ছে। এলডিসির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এফটিএসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মধ্য আয়ের ফাঁদ মুক্ত হতে বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, পোশাক খাত এদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে জাপান, চীন, ভারতে প্রচুর রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। এটিকে কাজে লাগাতে হবে। সেইসঙ্গে জিএসপি প্লাস সুবিধা পাওয়ার সে প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।
বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ডুয়িং বিজনেস পরিবেশ উন্নয়নে কাজ চলছে। বিশ্বব্যাংক এ নির্দেশক সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ বন্ধ করলেও বাংলাদেশ নিজের উদ্যোগে পরিবেশ উন্নয়নে কাজ করে চলছে। ওয়ান স্টপ সাভিস সেন্টারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের সেবা দেওয়া হচ্ছে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রেসিডেন্ট নিহাদ কবির বলেন, বেসরকারি খাত শিল্প বহুমুখীকরণে বিশেষ ভুমিকা রেখেছে। নীতিমালা অনুকুলে থাকায় এটা করা সম্ভব হয়েছে।
থ্রি গ্রোথ ড্রাইভার্স-বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ বাড়িয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে কৃষি ব্যবসা, ডিজিটাল অর্থনীতি ও সবুজ অর্থায়নের ভূমিকা রাখবে বলেও বক্তারা উল্লেখ করেন।
বেশ কিছু বছর ধরে বাংলাদেশকে একটি উন্নত ও সম্পদশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে সরকার। সরকারের বিভিন্ন পরিকল্পনার ফল হিসেবে দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ, বিদেশি বিনিয়োগ ও অন্যান্য ব্যবসায়িক সুযোগ বাড়ছে বলেও জানান তারা।
আলোচনায় আরও অংশ নেন এফআইসিসিআই’র প্রেসিডেন্ট রুপালী চৌধুরী, এইচএসবিসির বাংলাদেশের সিইও মাহবুবউর রহমান, জাপানের রাষ্ট্রদূত ইটো নাওকি, নেদাল্যান্ডের সহকারী মিশন প্রধান পাউলা রোজ স্কিনডিলার, কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত লি জ্যাংক কেনু ও অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের এমডি সৈয়দ নাসিম মঞ্জুর।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০২১
এসএমএকে/আরবি