খুলনা: খুলনায় সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপির ৪১ নেতাকর্মীর নামে দু’টি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। সোমবার (২২ নভেম্বর) পুলিশের সঙ্গে দুই দফায় বিএনপি নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনায় ওইদিন রাতেই মামলা দুটি করে পুলিশ।
খুলনা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আলামিন ও এসআই আবু সাদেক বাদী হয়ে মামলা দুটি দায়ের করেন।
খুলনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান আল মামুন মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলায় বিএনপি নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সরকারি কাজে বাধাদান ও হামলা চালিয়ে পুলিশকে আহত করার অভিযোগ আনা হয়েছে। দুটি মামলায় এ পর্যন্ত নয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
খুলনা থানার ওসি হাসান আল মামুন জানান, সোমবার (২২ নভেম্বর) সকালের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে বিএনপির ২৮ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৬০/১৭০ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেছে। এছাড়া বিকেলের ঘটনায় ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত ১৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রথম মামলায় পাঁচজন ও দ্বিতীয় মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু অভিযোগ করেছেন, পুলিশ শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ করে সাংবাদিকসহ তাদের ৭১ জন নেতাকর্মীকে আহত করেছে। এ ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় দলীয় কার্যালয়ে প্রেস ব্রিফিং করবেন তারা।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যেতে দেওয়ার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকে। এ সময় নেতাকর্মীদের সমাবেশ স্থলে যেতে বাধা দেয় পুলিশ। পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর শাখার সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু সভাপতিত্বে সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশের অনুমতি না থাকায় পুলিশ বাধা দিলে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। এক পর্যায় লাঠিচার্জ শুরু করে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। বিএনপির অভিযোগ এতে মহানগর বিএনপির সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জু, সহ-সভাপতি মীর কায়সেদ আলী, সাংবাদিকসহ ৭১ জন নেতাকর্মী আহত হন। এ সময় বিএনপি নেতা শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, মেহেদী হাসান সোহাগ, হেদায়েত হোসেন হেদু, মোস্তফা ও জাহাঙ্গীর হোসেনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বিএনপি নেতা মোর্ত্তজা ও তুহিনের নেতৃত্বে একাংশ আবার বিক্ষোভ সমাবেশ করতে গেলে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়াতে দেয়নি পুলিশ। এ সময় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পুলিশ টিয়ারসেল ও ফাঁকা গুলি করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটনায় বিএনপির ছয়জন আহত হয়েছে বলে বিএনপি নেতা সাহরুজ্জামান মোর্ত্তজা জানিয়েছেন।
পুলিশের দাবি এ ঘটনায় তাদের ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। অনুমতি না থাকায় সড়কের ওপর কোনো সমাবেশ করতে দেওয়া হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
এমআরএম/আরবি