খুলনা: খুলনায় বিএনপির সিনিয়র নেতাদের বেধড়ক পিটিয়েছে পুলিশ। পুলিশের স্বেচ্ছাচারিতার চূড়ান্ত রূপ দেখছি আমরা।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২টায় মহানগরীর কে ডি ঘোষ রোডের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও মহানগর বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জু।
খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু বলেন, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ নতুন করে তালিকা করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিপীড়ন করছে। চিকিৎসাধীন বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবিতে সোমবার ( ২২ নভেম্বর) পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। পুলিশ ৭১ জন নেতাকর্মীকে আহত করে উল্টো বিএনপির ৪১ নেতাকর্মীসহ ৩২০ জনকে আসামি করে পৃথক মামলা করেছে। যার মধ্যে সাতজন গ্রেফতার। গ্রেফতার আতঙ্কে নেতাকর্মীরা পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এর আগে বিএনপির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ২০০ মামলা দিয়ে গৃহহীন করা হয়েছে।
অবিলম্বে পুলিশের এই কর্মকাণ্ড বন্ধ না হলে ৫ হাজার নেতাকর্মীকে নিয়ে স্বেচ্ছায় কারাবরণের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বিএনপির এ কেন্দ্রীয় নেতা।
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু বলেন, পুলিশ এভাবে আমাদের পেটাতে পারে না। আমাদের অনুরোধ করতে পারে। কিন্তু আচমকা এ রকম অতর্কিত বর্বরচিত হামলা করতে পারে না। বিএনপি নেতাকর্মী ছাড়াও ১০ জন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। দোকানে দোকানে ঢুকে বিএনপির নেতাকর্মীদের পিটিয়েছে। একটি বিশেষ পরিবারের নির্দেশে পুলিশ এই বেপরোয়া কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। তারা আমাদের কাছে রাজনৈতিক শিশু। আমরা পুলিশ নয়, সেই রাজনৈতিক শিশুদের মাঠে চাই।
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকার যা করছে তা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া আর কিছুই নয়। সরকার প্রধানের বক্তব্যে গোটা জাতির কাছে তা স্পষ্ট হয়েছে। বিএনপির মানবিক কর্মসূচিতে পুলিশের নগ্ন হামলা প্রমাণ করে সরকারের পায়ের নিচের মাটি সরে গেছে। সরকার ক্ষমতা হারানোর ভয়ে নিজের ছায়া দেখলেও ভয় পাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি-কটুবাক্য ব্যবহার করা রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপির কাজ নয়, আমাদের প্রতিপক্ষ পুলিশ নয় আওয়ামী লীগ।
পুলিশের নগ্ন হামলা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে মঞ্জু বলেন, বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল, তাদের কর্মসূচিতে বাধা দেওয়ার কোন অধিকার পুলিশের নেই। সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে অসভ্য আচরণ, দুর্ব্যবহার, লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে আহত করা পুলিশের সুনাম ও ঐতিহ্য পরিপন্থি। তিনি অবিলম্বে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান। একই সঙ্গে গ্রেফতারদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি করেন।
সংবাদ সম্মেলনে মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি, বিএনপি নেতা শেখ মোশাররফ হোসেন, অ্যাডভোকেট বজলুর রহমান, অ্যাডভোকেট ফজলে হালিম লিটন, অধ্যক্ষ তারিকুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান মন্টু, মোল্লা খায়রুল ইসলাম, আব্দুর রাকিব মল্লিক, আবু হোসেন বাবু, মাহবুব কায়সার, আসাদুজ্জামান মুরাদ, মেহেদী হাসান দিপু, মহিবুজ্জামান কচি, ইকবাল হোসেন খোকন, নিজামুর রহমান লালু, ওয়াহিদুজ্জামান রানাসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানোর দাবি জানানো হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
এমআরএম/এমআরএ