ফেনী: শীত এখনও পুরোপুরি জেঁকে না বসলেও জমে উঠেছে শীতবস্ত্র বিক্রি। ফেনী শহরের অভিজাত বিপণি-বিতান থেকে শুরু করে রাজাঝির দিঘি পাড়ের ফুটপাতেও মানুষের সরব উপস্থিতি জানান দিচ্ছে শীতের আগমনে মানুষের প্রস্তুতির কথা।
আবহাওয়া অফিস বলছে, তাপমাত্রা ধারাবাহিকভাবে কমবে। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে শীত বাড়তে পারে। মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হতে পারে ১৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
শীতের আগমনে প্রস্তুতি হিসেবে শীতবস্ত্রের বিক্রি বেড়েছে ফেনী শহরের বিপণি-বিতান ও ফুটপাতের দোকান গুলোতে। সোমবার (২২ নভেম্বর) ও মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) ফেনী শহরের বিভিন্ন এলাকায় শীতবস্ত্রের দোকানগুলো ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
শহরের রাজাঝির দিঘি পাড়ের ফুটপাতের দোকানগুলোতে দেখা গেছে, নতুন-পুরাতন শীতবস্ত্রের হাট বসেছে। সর্বনিম্ন ৫০ টাকা থেকে শুরু করে হাজার টাকায় এখানে মিলছে শীতবস্ত্র। এসব দোকানে নিম্নআয়ের মানুষদেরই বেশি দেখা গেছে। এখানে সোয়েটার, চাদর, কম্বল, মোটা বিছানার চাদর থেকে শুরু করে সব ধরনের শীতবস্ত্র মিলছে। নারী-পুরুষ সবাইকেই দেখা গেছে এখানে কেনাকাটা করতে।
কবির আহম্মদ নামে এক ক্রেতা জানান, বড় মার্কেটের চাইতে এখানে শীতবস্ত্র অনেক সস্তা তাই প্রতি বছর শীতের কাপড় কিনেন তিনি।
তিনি বলেন, সাধ্যের মধ্যে এখানে সব ধরনের শীতের কাপড় পাওয়া যায়। তবে মার্কেটে গেলে টাকায় কুলিয়ে উঠা যায় না। সেখান থেকে কিনলে পরিবারের সবার জন্য শীতের কাপড় কেনা সম্ভবও হয় না।
আজগর হোসেন নামে এক শীতবস্ত্র বিক্রেতা বলেন, এখানে অনেক ধরনের পোশাক পাওয়া যায়। নতুন, পুরাতন, আধা পুরাতনসহ সব ধরনের কাপড় এখানে সূলভ মূল্যে তারা বিক্রি করেন। শহরের বড় বাজারের কম্বলের পাইকারি দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। এখানে ২শ’ টাকা থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের কম্বল বিক্রি হচ্ছে। সোমবার (২২ নভেম্বর) রাতে গিয়ে দেখা যায়, অনেকেই এসেছেন হতদরিদ্র মানুষের মধ্যে বিতরণের জন্য কম্বল কিনতে। কেউ কেউ এসেছেন পাইকারি কেনার জন্য। নিজের ব্যবহারের জন্য কিনতে এসেছেন অনেকেই।
আফসার হোসেন নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, শীতের আগমনে মানুষ কম্বল ও শীতবস্ত্র কিনতে শুরু করেছে। আশা করা যাচ্ছে আগামী সপ্তাহের মধ্যে বিকি-কিনি আরও বাড়বে।
ফেনী শহরের শহীদ হোসেন উদ্দিন বিপণি-বিতানে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। ক্রেতাদের বেশির ভাগ এসেছেন শীতবস্ত্র কিনতে। পুরুষরা ব্লেজার, জ্যাকেট কিনতে এসেছেন। নারীদের অনেকেই এসেছেন সোয়েটার ও চাদর কিনতে। হালকা কাপড়ের চেয়ে মোটা কাপড়ের দিকেই ঝুঁকছেন তারা। বেচাবিক্রি বেশি হওয়ায় খুশি বিক্রেতারাও।
শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের পাশের অভিজাত ব্র্যান্ড শপগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানেও বেড়েছে ক্রেতাদের ভিড়।
বিক্রেতারা জানান, ব্লেজার, জ্যাকেট, সোয়েটার, কোটি, চাদরসহ বিভিন্ন ধরনের শীতবস্ত্র তারা বিক্রি করছেন। গত কিছুদিন ধরে ক্রেতাদের সংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে শহরের দর্জির দোকানগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, ব্লেজারের সেলাইও বেড়েছে কয়েকগুণ। শীতে মানুষ নিজেকে কিছুটা কেতাদুরস্ত রাখতে চায় সে কারণেই ব্লেজার পরেন তারা।
শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার সড়কের পোশাক সেলাইকারী প্রতিষ্ঠান টপ টেনের এক কর্মকর্তা জানান, শীত উপলক্ষে মানুষ ব্লেজার সেলাই করতে আসছে তাদের প্রতিষ্ঠানে। গত এক সপ্তাহে ক্রেতাদের সংখ্যা বেড়েছে।
এদিকে পাড়া-মহল্লার লেপ-তোষক তৈরির দোকান গুলোতেও বেড়েছে মানুষের ভিড়।
শহরের দাউদপুর এলাকার এক দোকানী বলেন, শীতকালে এখনও কিছু মানুষ গায়ে লেপ মুড়িয়ে ঘুমাতে পছন্দ করেন। আর সে কারণেই শীত এলে লেপ তৈরি বেড়ে যায়। এছাড়াও অনেকে তোষকও অর্ডার দিয়ে তৈরি করেন।
তিনি বলেন, সর্বনিম্ন ৬শ’ থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ সাত হাজার টাকার মধ্যে এসব লেপ-তোষক তৈরি করেন তারা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০২১
এসএইচডি/আরআইএস