ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা: ক্ষমতাকে শুধু ভোগ করার বস্তু হিসেবে নয়, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করার সুযোগ হিসেবে নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে বলে জানান তিনি।

বুধবার (২৪ নভেম্বর) স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে সংসদে বিশেষ আলোচনার জন্য ১৪৭ বিধিতে প্রস্তাব উপস্থাপন করে এবং প্রস্তাবের পক্ষে দেওয়া বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পর যে কাজটি বঙ্গবন্ধু শুরু করেছিলেন, আর ৫টি বছর যদি তিনি সময় পেতেন বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতো। আজকে যে সম্মানজনক অবস্থায় আছে আমাদের বাংলাদেশ অর্থাৎ ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা যে জায়গায় আসতে পেরেছি, সেই জায়গায় আমরা স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যে পৌঁছে যেতে পারতাম যদি জাতির পিতা বেঁচে থাকতেন। আমাদের দুর্ভাগ্য তাকে হত্যার পর সেই অগ্রযাত্রা ব্যাহত হয়। মাত্র সাড়ে তিন বছরের মধ্যে দেশ জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশের স্বীকৃতি পেয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর বাংলাদেশ সেখানেই পড়েছিল। দেশের মানুষ আমাদের ভোট দিয়েছেন বলেই আজকে বাংলাদেশকে আমরা উন্নয়নের মহাসড়কে আনতে পেরেছি। মাত্র এই ১২ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হয়েছে।

তিনি বলেন, করোনা ভাইরাসের মতো মহামরি মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে ব্যবস্থা নিয়েছি। ইতোমধ্যে ৯ কোটি ডোজ টিকা দেওয়া হয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রায় চার কোটির মতো পেয়েছে দ্বিতীয় ডোজ আর বাকিরা এক ডোজ করে। ভ্যাকসিনের কোনো অভাব হবে না। প্রণোদনার প্যাকেজ দিয়ে অর্থনীতিকে সচল রেখেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসণ করেই যেন তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের ভ্যাগ্যের উন্নতি হয় সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সমস্ত পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা শুধু ক্ষমতাকে ভোগ করার বস্তু হিসেবে নেইনি। ক্ষমতা মানে জনগণের সেবা করার সুযোগ পাওয়া, জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করার সুযোগ পাওয়া। আজ দারিদ্র্যের হার ২০ ভাগে নামিয়ে আনতে পেরেছি। যদি এই করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব না থাকতো তাহলে ১৭ ভাগে নামিয়ে আনতে পারতাম, সেভাবে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছিলাম। তারপরও উন্নয়নের চাকা কিন্তু থেমে যায়নি। প্রবৃদ্ধি ৮ ভাগের উপরে এনেছিলাম। করোনার কারণে বিশ্বব্যাপীই অর্থনৈতিক মন্দা। সেখানে আমরা এককভাবে কতটুকু করবো? তারপরও আমি বলতে পারি, দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা সবচেয়ে বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশ, ১১টি শক্তিশালী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ একটি। দেশে ৯৯ দশমিক ৭৫ ভাগ বিদ্যুৎ আমরা মানুষের ঘরে পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছি। প্রতিটি ঘর আমরা আলোকিত করেছি।

তিনি বলেন, সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী আমাদের লক্ষ্য যে, বাংলাদেশে একটি ঠিকানাবিহীন মানুষ থাকবে না। প্রতিটি মানুষকে আমরা ঘর করে দেবো এবং সেই পরিকল্পনা আমরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। এভাবে আমরা দেশের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বিনা পয়সায় করোনা টেস্ট করাচ্ছি, আবার ভ্যাকসিনও দিয়ে যাচ্ছি। ধনী, দরিদ্র থেকে শুরু করে ছাত্ররা সবাই এ ভ্যাকসিন পাবে। শত বাধা অতিক্রম করেও আজকে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আনন্দিত সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০০৮ সালে রূপকল্প-২০২১ আমরা ঘোষণা করেছিলাম, সেটা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি, আজ বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। পরিকল্পিতভাবে সমন্ত কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছি বলেই এটা সম্ভব হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমি দেশের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই এই কারণে যে, তারা আমাদের ভোট দিয়ে সরকার গঠনের সুযোগ দিয়েছেন বলেই আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে পারছি। স্বাধীনতার রজতজয়ন্তী যখন আমরা উযযাপন করি তখন আওয়ামী লীগ সরকারেই ছিল। কাজেই এবারও মুজিববর্ষ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উযযাপন আমরা করে যাচ্ছি। আজকে আমাদের সমাজের যে যে স্তরেই থাকুক পাকিস্তান আমলে তো দেশের কোনো মানুষ কখনও উন্নত জীবনের স্বপ্ন দেখতে পারেনি বা যত মেধাবীই হোক, চাকরির ক্ষেত্রেই হোক বা গবেষণার ক্ষেত্রেই হোক কখনও যে মাথা তুলে দাঁড়াতে পারবে সেই সুযোগটা ছিল না। দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই তো সেটা সম্ভব হয়েছে। আমাদের সামনে আরও এগিয়ে যেতে হবে, সেই পরিকল্পনার কাঠামোটাও আমি করে রেখেছি। আমরা ২০৪১ সালে বাংলাদেশটাকে কীভাবে দেখতে চাই সেই প্রেক্ষিত পরিকল্পনা আমরা প্রণয়ন করেছি।

সরকারপ্রধান বলেন, বাংলাদেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন একটা দেশ হিসেবে এবং বাঙালি জাতিকে উন্নত সমৃদ্ধ জাতি হিসেবে আমরা উন্নীত করতে চাই, যে স্বপ্নটা জাতির পিতা দেখেছিলেন—দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফুটিয়ে সোনার বাংলা গড়ে তুলবেন, ইনশাল্লাহ সেই সোনার বাংলা আমরা গড়তে পারবো। ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ সোনার বাংলারূপেই সারাবিশ্বে মাথা উঁচু করে চলবে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ এক উন্নয়ন বিস্ময়: প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
এসকে/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।