ঢাকা: তাজরীন ফ্যাশনের অগ্নিকাণ্ডে ১১২ জন শ্রমিকের মৃত্যুকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড বলে অভিহিত করে হতাহতদের ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও চিকিৎসার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
তাজরীন অগ্নিকাণ্ডের ৯ বছর পূর্তিতে বুধবার (২৪ নভেম্বর) গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির আশুলিয়া শাখার পক্ষ থেকে হতাহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদন ও প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত ছিলেন গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার, সাধারণ সাম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, আশুলিয়া থানা শাখার সভাপ্রধান বাবুল হোসেন, সাধারণ সম্পাদক জিয়াদুল ইসলাম, তাজরীনের শ্রমিক ও অন্যান্য নেতারা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাজরীন গেটের সামনেই একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় কেন্দ্রীয় সভাপ্রধান তাসলিমা আখ্তার বলেন, ৯ বছর আগে ২০১২ সালের ২৪ নভেম্বর মালিকপক্ষের অব্যবস্থাপনা, কাঠামোগত ত্রুটি এবং সরকারি ছাড়পত্রে কারখানা চালাবার সুযোগের কারণে তাজরীনে ১১২ জন শ্রমিক আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ করেন।
এ ঘটনাকে কাঠামোগত হত্যাকাণ্ড হিসেবে অভিহিত করে তাসলিমা আখ্তার বলেন, ৯ বছর পার হলেও বিচার প্রক্রিয়ার ধীর গতি এবং সরকারের অবহেলার কারণে এত বড় শ্রমিক হত্যার বিচার হয়নি। এই ঘটনা শ্রমিক আন্দোলনের ইতিহাসে ন্যক্কারজনক ঘটনা হিসাবেই থাকবে।
তিনি বলেন, দেলোয়ার হোসেনসহ ১৩ আসামির শাস্তি হলে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি বন্ধ হতো, অন্যান্য কারখানার মালিকরা সতর্ক হতো, রানা প্লাজা, রূপগঞ্জের মতো ঘটনায় নির্মম মৃত্যু দেখতে হতো না।
প্রতিবাদ সভায় অন্যান্য শ্রমিক নেতারা বলেন, একদিকে বিচার প্রক্রিয়া ঝুলন্ত অবস্থায় অন্যদিকে নিহতদের পরিবার এবং আহতরা যথাযথ ক্ষতিপূরণ না পাওয়ায় দুঃসহ জীবনযাপন করছেন। করোনাকালে এই দুরাবস্থা আরও প্রকট হয়েছে। গত বছর করোনার বিপদকালে সংকটাপন্ন আহত শ্রমিকরা প্রেসক্লাবের সামনে দীর্ঘদিন অবস্থান নেন। তারা দাবি তোলেন চিকিৎসা, পুনর্বাসন এবং ক্ষতিপূরণের। কিন্তু নানাভাবে সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বাস দিলেও আজও তারা চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও যথাযথ ক্ষতিপূরণের সুযোগ থেকে বঞ্চিত।
অবিলম্বে নিহত পরিবারের সদস্যদের একজীবনের ক্ষতিপূরণ এবং আহত শ্রমিকদের যথাযথ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিতে সরকার এবং মালিকপক্ষের কাছে আহবান জানান শ্রমিক নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ২০০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১
এমজেএফ