নাটোর: কলেজের কক্ষে ছাত্রীকে নিয়ে সময় কাটানোর অভিযোগে নাটোরের গুরুদাসপুর রোজি মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রভাষক মো. মাজেম আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে নোটিশ প্রাপ্তির তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় ওই কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. রুহুল কবির আব্বাসী বাংলানিউজকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, তার কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মো. মাজেম আলী মলিন সম্প্রতি কলেজের এইচএসসির প্রথম বর্ষের এক ছাত্রীকে নিয়ে একটি কক্ষে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় কাটান বলে অভিযোগ ওঠে।
ঘটনার পরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে ওই ছাত্রীকে বাড়ি পৌঁছে দেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। পরে এ নিয়ে এলাকায় সমালোচনার ঝড় উঠে।
একই সঙ্গে ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কলেজে দায়িত্বরত কর্মচারী ও আবাসিক ছাত্রীরা ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগও করেন। ফলে এই ঘটনায় কলেজের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয়েছে। একপর্যায়ে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও সদস্যদের নির্দেশে তিনি প্রাথমিকভাবে প্রভাষক মাজেম আলীকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন। নোটিশ প্রাপ্তির তিন কর্মদিবসের মধ্যে সন্তোষজনক লিখিতভাবে জবাব দিতে বলা হয়েছে। অন্যথায় তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে ঘটনাটি সন্দেহজনক দাবি করেন তিনি। তাই তদন্ত করে আসল রহস্য উদ্ঘাটন করার পর ব্যবস্থা নেওয়া দরকার।
এ ব্যাপারে কলেজ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ও গুরুদাসপুর পৌরসভার মেয়র মো; শাহনেওয়াজ আলী বাংলানিউজকে জানান, কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব দেওয়ার পর তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতেই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে ওই কলেজের অভিযুক্ত প্রভাষক মাজেম আলী মলিন তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বাংলানিউজকে বলেন, কলেজের কমিটি গঠন ও নিয়োগ বাণিজ্যের প্রতিবাদ করার কারণে কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তার বিরোধ সৃষ্টি হয়। এমনকি হাতাহাতির ঘটনা ঘটে এবং বিষয়টি পুলিশ পর্যন্ত গড়ায়। ঘটনার দিন পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। এ নিয়ে তাকে ঝামেলায় ফেলতে এবং তার মানহানি ও হয়রানি করতেই কলেজ কর্তৃপক্ষ এই ধরনের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে ছাত্রীকে নিয়ে অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছেন।
এছাড়া তাকে সবার কাছে হেয় করতে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে। তাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করছেন তারা। ছাত্রীকে নিয়ে কলেজে কোনো প্রকার ঘটনাই ঘটেনি।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, গত ২০ নভেম্বর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ রুহুল করিম আব্বাসী বিধি বহির্ভূতভাবে তাকে শোকজ করেন। শোকজে কোনো প্রকার ছাত্রী বা নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা উল্লেখ করা হয়নি। সন্দেহজনক ভাবের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশের লিখিত জবাব দেওয়া হয়েছে। তিনি এটিকে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র বলে দাবি করেছেন।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মতিন বাংলানিউজকে জানান, গত দুই সপ্তাহ আগে কলেজের অভ্যন্তরীণ একটি বিষয় নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয় এবং পরিস্থিতি শান্ত করা হয়। তবে এ নিয়ে থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৪, ২০২১/আপডেট: ০১৩৪ ঘণ্টা
এনটি/আরএ