কুমিল্লা: কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) ১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সৈয়দ মোহাম্মদ সোহেল (৫০) ও আওয়ামী লীগ কর্মী হরিপদ সাহাকে (৬০) গুলি করে হত্যার ঘটনায় ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর) দিবাগত রাত ১টার দিকে কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন নিহত সোহেলের ভাই সৈয়দ মোহাম্মদ রুমন।
অন্য আসামিরা হলেন, নবগ্রামের শাহ আলমের ছেলে জেল সোহেল, সুজানগরের রফিক মিয়ার ছেলে সাব্বির হোসেন, একই এলাকার কানু মিয়ার ছেলে সুমন, সংরাইশের কাকন মিয়ার ছেলে সাজন, তেলিকোনার আনোয়ার হোসেনের চেলে রকি, সুজানগরের জানু মিয়ার ছেলে আলম, একই এলাকার নুর আলীর ছেলে জিসান মিয়া, সংরাইশের মঞ্জিল মিয়ার ছেলে মাসুম, নবগ্রামের সামছুর হকের ছেলে সায়মন ও সুজানগরের কানাই মিয়ার ছেলে রনি। তাদের মধ্যে সুমনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
কাউন্সিলর সোহেল কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য ও ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। নিহত হরিপদ সাহা নগরীর ১৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাহাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার পেটে দুইটি গুলি লেগেছিল। এছাড়া এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ আরও ৫ জন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা করছি।
মৃত্যু নিশ্চিত করতে প্রধান আসামি শাহ আলম কাউন্সিলর সোহেলের ডান কপালে গুলি করে। ২ নম্বর আসামি জেল সোহেল মাথায় গুলি করে। ৫ নম্বর আসামি সাজন বুকের বাম পাশে ও ৬ নম্বর আসামি রকি ডান গালে গুলি করে। থানায় দায়ের করা মামলায় এ তথ্য তুলে ধরেন কাউন্সিলর সোহেলের ভাই সৈয়দ রুমন। তিনি মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে কুমিল্লা কোতয়ালি মডেল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। এতে ১১ জনের নামোল্লেখ করেন। অজ্ঞাত আরো ১০ জন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, আসামিরা মাদক ব্যবসা করেন। কাউন্সিলর সোহেল বাধা দেয়ায় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠে। তিনি সোমবার পাথুরিয়াপাড়ায় তার অফিস সংলগ্ন থ্রি-স্টার এন্টারপ্রাইজ রড সিমেন্ট দোকানে বসে ছিলেন। এই সময় আসামিরা কালো পোশাক পরে প্রবেশের পর এলোপাতাড়ি গুলি করে। ১ থেকে ৪ নম্বর আসামি এলোপাতাড়ি গুলি করে। গুলিবিদ্ধ হয়ে কাউন্সিলর সোহেল চেয়ার থেকে নিচে পড়ে যান। তারা মৃত্যু নিশ্চিত করতে সোহেলের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুলি করে। তাকে বাঁচাতে হরিপদ সাহা এগিয়ে এলে তার পেটে গুলি করেন ৭ নম্বর আসামি আলম ও ৯ নম্বর আসামি মাসুম। তারা এই দুজনের মৃত্যু নিশ্চিত করতে শাটার বন্ধের পর বাইরে দাঁড়িয়ে থাকে। লোকজন তাদের উদ্ধার করতে এলে ৮ নম্বর আসামি জিসান, ১০ নম্বর আসামি জিসান ও ১১ নম্বর আসামি মনির তাদের গুলি করে। এতে ১ থেকে ৫ নম্বর সাক্ষী বাদল, রাসেল, জুয়েল, রিজু ও সোহেল চৌধুরী গুলিবিদ্ধ হন। আসামি সাব্বির ও সুমন কাঁধ ব্যাগ থেকে ককটেল ও অন্য আসামিরা গুলি ছোড়ে পানুয়া খানকা (দরবার শরিফ) দিয়ে উত্তর দিকে চলে যান।
সোমবার (২২ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নগরীর পাথরিয়াপাড়া থ্রি স্টার এন্টারপ্রাইজে সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত হন কাউন্সিলর সোহেল ও হরিপদ সাহা। কাউন্সিলর সোহেলকে এলোপাতাড়ি ৯টি গুলি করেছে ঘাতকরা। হামলাকারীদের পিস্তলের দুটি গুলি সোহেলের মাথায়, দুটি বুকে, অন্য পাঁচটি পেট ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে লাগে।
আরো পড়ুন:
কুসিক কাউন্সিলর সোহেল হত্যা: আসামি সুমন গ্রেফতার
কাউন্সিলর সোহেল হত্যায় মামলা
কাউন্সিলর হত্যা: পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে গুলি চলে
শাহআলমের সঙ্গে দ্বন্দ্ব ছিল কাউন্সিলর সোহেলের
ওরা এসেছিল সাতটি মোটরসাইকেলে
কুমিল্লায় কাউন্সিলরসহ ২ জনকে গুলি করে হত্যা
অফিসে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি, কাউন্সিলরসহ ৯ জন গুলিবিদ্ধ
কাউন্সিলর সোহেল হত্যা মামলার আসামি মাসুম গ্রেফতার
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০২১
এনটি