লক্ষ্মীপুর: রাজধানীর গুলিস্তানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির চাপায় নিহত নটর ডেম কলেজছাত্র নাঈম হাসানের স্বপ্ন ছিল বিচারক হওয়ার। কিন্তু তার আগেই অদক্ষ চালকের গাড়ির চাপায় তার মৃত্যু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) সকালে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে গ্রামের বাড়িতে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাঈম হাসান প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে প্রথমে ঢাকা কলেজে ভর্তি হয়। পরে তিনি নটর ডেম কলেজে ভর্তি হন। তিনি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের মানবিক বিভাগের ছাত্র ছিল। তার স্বপ্ন ছিল সে পড়ালেখা শেষ করে বিচারক হবে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে নাঈম হাসানের মামা কলেজ শিক্ষক ফারুক আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলের সমতুল্য ছিল নাঈম। খুব মেধাবী ছাত্র ছিল। জজ হয়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন নিয়ে তিনি পড়ালেখা করছিল। কিন্তু ময়লা পরিষ্কারক যার গাড়ি চালানোর কোনো লাইসেন্স ছিল না, সে আমার ভাগ্নেকে হত্যা করেছে। আমি এ হত্যার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।
নাঈম হাসানের বাবা শাহ আলম বাংলানিউজকে বলেন, আমার ছেলেতো এখন আর নেই। তার স্বপ্নগুলোকে বাস্তবায়ন করবে? আমি পল্টন থানায় মামলা করেছি। আমি ওই গাড়ি চালকের উপযুক্ত বিচার চাই।
পরিবার সূত্র জানায়, নাঈম হাসানের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। তিনি রাজধানীর নীলক্ষেত এলাকা বই ব্যবসা করেন। ব্যবসা ও দুই ছেলের উন্নত পড়ালেখার জন্য তিনি রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের জাওলাহাটি এলাকায় নিজ বাড়িতে থাকতেন তারা। সেখানে তার প্রথম নামাজের জানাযা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সকালে তার মৃতদেহ গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ পৌরসভার পূর্ব কাজীরখিল এলাকায় নিয়ে নিয়ে আসা হয়। নিজ বাড়িতে নাঈমের দ্বিতীয় নামাজের জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পারিবারিক কবরস্থানে তার মরদেহ দাফন করা হয়।
বুধবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে গুলিস্তান মার্কেটের সামনে রাস্তা পার হওয়ার সময় দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ির ধাক্কায় নাঈম গুরুত্বর আহত হয়। আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১২০৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
এনটি