রাজধানীর বাড্ডার বড় বেরাইদ এলাকায় আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের প্রজেক্টের ভেতর ঢুকে ১২৮টি গাছ কেটেছে সংঘবদ্ধ সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১টার দিকে প্রজেক্টের দক্ষিণ পাশ থেকে প্রবেশ করে এই তাণ্ডব চালায় তারা।
জানা গেছে, বড় বেরাইদে সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত মো. মিকাইল হোসেন বাবুলের নেতৃত্বে মো. জনি, মো. রান্টু, মো. শাকিল ও রাজ্জাকসহ ১০/১২ জন এই ঘটনা ঘটাতে পারেন। তাদের বিরুদ্ধে এর আগেও বাড্ডা থানায় জিডি করা হয়েছে।
প্রজেক্টের নিরাপত্তায় দায়িত্বরত রাশেদুল ও মোস্তাফিজ জানান, রাত আনুমানিক সোয়া একটার দিকে ১০/১২ জনের একটি সশস্ত্র দল মুখে গামছা বেঁধে বড় বড় রামদা, চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্র দিয়ে প্রজেক্টের ভেতরে প্রবেশ করে গাছগুলো এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ধ্বংস করছিল। এসময় দুই নিরাপত্তাকর্মী সামনের দিকে টচ লাইট জালালে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাদের ধাওয়া করে। এক পর্যায়ে তারা জীবন রক্ষার জন্য দৌড়ে প্রজেক্টের ভবনে ঢুকে পড়েন। এসময় ওই সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে ১২৮টি গাছ ধ্বংস করে ফেলে। নিরাপত্তাকমীরা আরো জানান, একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ প্রায় তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল।
বাড্ডা থানার এসআই আরিফ জানান, দুর্বৃত্তরা মুখোশ পরে আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের প্রজেক্টে গাছ কেটে চলে গেছে। এই বিষয়ে মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
সন্ত্রাসীদের কাউকে চিহ্নিত করা গেছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে আরিফ জানান, ওই ঘটনায় কাউকে চিহ্নিত বা শনাক্ত করা যায়নি। তবে গত ২২ নভেম্বর আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের সাইনবোর্ড কেটে ফেলে একটি গ্রুপ। ওই ঘটনায় থানায় একটি জিডি হয়েছে। ওই জিডিতে যাদের বিবাদী করা হয়েছে, ধারনা করা হচ্ছে তাদের মধ্যে কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, গত ২২ নভেম্বর বেরাইদের আমিন মোহাম্মদ গ্রুপের প্রজেক্টের সামনে বড় লোহার সাইবোর্ডের সামনে মোটরসাইকেল যোগে মো. মিকাইল হোসেনের নেৃতৃত্বে ৭/৮ জন এসে প্রকাশ্যে একটি লোহার সাইনবোর্ড গ্যান্ডিং মেশিন দিয়ে কেটে ফেলে। আরেকটি সাইনবোর্ড কাটার সময় দায়িত্বরত নিরাপত্তাকর্মী শাখাওয়াত হোসেন বাধা দিলে সন্ত্রাসীরা তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়। একপর্যায়ে তারা হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। ঘটনার পরের দিন বাড্ডা থানায় গিয়ে নিরাত্তাকর্মী মো. মোস্তফা কামাল একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। জিডি নম্বর ১৭১১। ওই জিডিতে বিবাদী করা হয় বড় বেরাইদ এলাকায় মো. ইসরাফিলের ছেলে মো. মিকাইল হোসেন বাবুল (৫৫), মো. আবুল খায়েরের ছেলে মো. জনি (৩২), মো. নুরুর ছেলে মো. রান্টু (৩৩), মো. মজিবুর রহমানের ছেলে মো. শাকিল (২৭) ও রাজ্জাককে (২৬)।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায়, সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে অর্ধেক কাটা কলাগাছগুলো। বেশ কয়েকটি গাছে কলার ছড়ি দেখতে পাওয়া যায়। ছড়িগুলো মাটিতে পড়ে ছিল। পেয়ারা গাছগুলো ডালপালা এমনকি গোড়া থেকেই কেটে ফেলা হয়েছে। এমন নৃসংসতা দেখে অনেকেই আফসোস করছেন।
প্রজেক্টের দক্ষিণ পাশে বসবাসরত স্থানীয়রা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, বাবুল গংরা প্রায় সশস্ত্র অবস্থায় হামলা-ভাংচুর চালায়। তাদের উৎপাতে এলাকায় বসবাসকারীরা সব সময় আতংকে থাকেন। ওই সূত্র আরো জানায়, এখানে রাত ১১টার পর সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। রাতের অন্ধকারে এভাবে গাছ কেটে ফেলা দুঃখজনক।
এ বিষয়ে গুলশান জোনের উপ-কমিশনার (ডিসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, আমি এখনো বিষয়টি জানি না। থানায় খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত বলতে পারবো।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০২১
নিউজ ডেস্ক