মৌলভীবাজার: কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর ইউনিয়নের পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইনের নিজ বাড়ি থেকে গত ১৯ নভেম্বর রাতে নিখোঁজ হন চা শ্রমিক রাসেল মিয়া (২৮)। পরদিন দুপুরে বাড়ির পাশে আমঘাট নামক পাহাড়ি ছড়া থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
লাশ উদ্ধারের ৬ দিন পর সূত্রহীন এই হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করে মূল হত্যাকারীসহ ২ জনকে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) রাতে আটক করেছে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। আটকরা হলেন—পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিমপাড়ার দুলাল মুন্ডা (৩২) ও তার সহযোগী রঞ্জিত কুর্মী (৩০)।
কমলগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম জানান, আলোচিত এই মামলাটি ছিল একেবারেই ক্লু-ছাড়া। কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইয়ারদৌস হাসানের নির্দেশনায় হত্যার রহস্য উদঘাটনে তদন্ত শুরু করি। মামলার তদন্ত শুরুর মাত্র ৬ দিনের মধ্যে বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) সন্ধ্যায় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে পাত্রখোলা চা বাগানের পশ্চিম লাইন এলাকার মাংরা মুন্ডার ছেলে দুলাল মুন্ডা ও তার সহযোগী রঞ্জিত কুর্মীকে আটক করা হয়। এরপর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে ঘটনার বর্ণনা দেন।
পরে রাতেই পুলিশ তাদের দুজনকে মৌলভীবাজার মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের কাছে উপস্থিত করলে তারা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে মূল আসামি দুলাল মুন্ডা বলেন, হত্যাকাণ্ডের সপ্তাহ দশেক আগে নিহত রাসেলের খালাতো ভাই মন্নানের সঙ্গে রাস্তায় সিএনজি চালিত অটোরিকশার পার্কিং নিয়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় পরে রাসেলের সঙ্গেও আমার বাকবিতণ্ডা হলে সে আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেয়। তখন থেকে আমি ও বন্ধু রঞ্জিত রাসেলকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকি।
১৯ নভেম্বর মণিপুরি মহারাসলীলা উৎসবের রাত ১২টার দিকে রাসেলের সঙ্গে দেখা হলে আসমিরা তাকে ফুসলিয়ে মদ্যপান করিয়ে পাত্রখোলা চা বাগানের পাশে পশ্চিম লাইন আমঘাট নামক স্থানে নিয়ে যান। সেখানে রাত দেড়টার দিকে রঞ্জিত রাসেলের পা চেপে ধরেন আর দুলাল তার ঘাড় ভেঙে মৃত্যু নিশ্চিত করে লাশ পাহাড়ি ছড়ায় ফেলে চলে যান।
কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল রানা বলেন, লাশ উদ্ধারকালেই রাসেলের বাবা বাচ্চু মিয়া ওই দিন সন্ধ্যায় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছিলেন। এ অভিযোগের তদন্তকালে দুলাল মুন্ডা ও রঞ্জিতকে আটক করা হয়েছে। আটেকের পরই তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫০ ঘণ্টা, ২৭ নভেম্বর, ২০২১
বিবিবি/এমজেএফ