ঢাকা: বন্যপ্রাণী হত্যা ও নির্যাতন বন্ধে সাত দফা দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ জোট। বন্যপ্রাণী হত্যা ও নির্যাতনের জন্য বন অধিদপ্তরকে দায়ী করেছে জোটটি।
রোববার (২৮ নভেম্বর) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বন অধিদপ্তরের সামনে আয়োজিত অবস্থান কর্মসূচিতে সাত দফা দাবি জানানো হয়।
কর্মসূচি থেকে সম্প্রতি হাতি হত্যা, বিভিন্ন সময় বন্যপ্রাণী হত্যা ও বন উজাড় প্রতিরোধে বন অধিদপ্তরের ব্যর্থতার প্রতিবাদ জানানো হয়। এসব ঘটনায় বন সংশ্লিষ্টদের জনগণের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ এবং সমস্যাগুলো দূর করে দ্রুত বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানায় ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠন।
বন অধিদপ্তরের সামনে দিনভর অবস্থান নিয়ে মানববন্ধন, চিত্রাঙ্কন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে সংগঠনগুলো। একইসঙ্গে বন ও বন্যপ্রাণীর নিরাপত্তা নিশ্চিতে ব্যর্থতার জন্য বর্তমান বন ব্যবস্থাপনার প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে বন অধিদপ্তরে সাত দফা দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
দাবিগুলোর হলো—হাতি হত্যার ঘটনাগুলোর বিষয়ে নিরপেক্ষ, বস্তুনিষ্ঠ ও বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে তদন্ত করে দোষীদের চিহ্নিত ও শাস্তির মুখোমুখি করতে হবে; হাতির করিডোর থেকে দখলদারদের উচ্ছেদ করে সেগুলোকে হাতির আবাসস্থল হিসেবে ফিরিয়ে আনতে হবে; দেশের বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষায় অবিলম্বে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি নিরপেক্ষ জাতীয় কমিশন গঠন করতে হবে; বন ও বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত বিদ্যমান সব আইনে বন বিভাগের দায়িত্ব ও কর্তব্য স্পষ্টভাবে সন্নিবেশ করতে হবে এবং এ বিভাগের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে; বননীতি পরিবর্তন করে বনভূমিতে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা বন্ধ করতে হবে এবং বনভূমিকে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ও সংরক্ষণের স্থান হিসেবে সুরক্ষিত করতে হবে; প্রতিটি বন্যপ্রাণী সংক্রান্ত অপরাধের ঘটনা নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে এবং সেক্ষেত্রে বন বিভাগের ভূমিকা সকলের কাছে স্পষ্ট করতে হবে এবং এসডিজি-১৪ এবং ১৫ বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে; নতুন করে উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য আর কোনো বনভূমি বরাদ্দ না দেওয়া এবং বন বিভাগের লোকবল ও বরাদ্দ বাড়িয়ে যুগোপযোগী এবং আধুনিক করে গড়ে তুলতে হবে।
বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ জোটের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আহমদ কামরুজ্জমান মজুমদার বলেন, আমরা মর্মাহত হয়েছি সাম্প্রতিক ঘটনাগুলো দেখে। আমরা চাই বনবিভাগ আমাদের দাবিগুলো মেনে নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অবস্থান কর্মসূচিতে একাত্মতা প্রকাশ করে বন অধিদপ্তরের বনরক্ষক (প্রশাসন ও অর্থ) হোসেন মোহাম্মদ নিশাদ বলেন, আপনাদের দাবিগুলোর বিষয়ে আমরা প্রয়েজনীয় ব্যবস্থা নেবো। বন ও বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আমাদের কর্মতৎপরতা আরও বৃদ্ধি করবো। আপনারা যে সচেতনতামূলক কাজগুলো করছেন এটা আমাদের জন্যও সহায়ক। আমরা একসঙ্গে সচেতনতার বিষয়ে কাজ করবো।
দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ৩৩টি পরিবেশবাদী সংগঠন ও ১২ জন বিশেষ ব্যক্তি একাত্মতা ঘোষণা করেন। এছাড়া এতে অংশ নেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. কবিরুল বাশার, সেভ আওয়ার সি’র মহাসচিব মুহাম্মদ আনোয়ারুল হক ও বন্যপ্রাণী গবেষক আদনান আজাদ আসিফ প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ০২০৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
এমআইএইচ/এমজেএফ