নাটোর: গ্রামাঞ্চলের মানুষের আদি উৎসবগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে পলো দিয়ে মাছ ধরা। যা আবহমানকাল ধরে মানুষ এই উৎসবটি পালন করে আসছে।
তাই প্রতিবছর এই সময় এলেই দল বেধে লোকজন বিলের মধ্যে পলো হাতে ঝাঁপিয়ে পড়েন মাছ ধরতে। আর এতে শুরু হয় মাছ ধরার প্রতিযোগিতা। তবে স্থান ভেদে বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন সময়ে এই উৎসবটি পালন করা হয়।
সোমবার (২৯ নভেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চলনবিল অধ্যুষিত নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার আত্রাই নদীতে পলো দিয়ে চলে মাছ ধরার উৎসব। এ সময় উপজেলার ধামাইচ বাজার, হেমননগর, মাগুড়া বিনোদ, হামকুড়িয়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ছেলে-বুড়োসহ ২ শতাধিক মানুষ কারোও হাতে পলো, ছিটকি জাল, উড়াল জাল, লাঠি জাল, হাত জাল (ঠেলা জাল) নিয়ে ছুটে আসেন নদীর পাড়ে। তারা মনের আনন্দে মাছ শিকার করেন। শোল, বোয়াল মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পেয়ে বেশ খুশি তারা।
উপজেলার মশিন্দা ইউনিয়নের বিলবিয়াসপুর গ্রামের লিয়াকত আলী বাংলানিউজকে বলেন, পলো হাতে তিনি নিজেও মাছ শিকার করতে আসছেন। গ্রামীণ সংস্কৃতি বা পুরোনো ঐতিহ্য কিছুটা হলেও ধরে রাখার চেষ্টা করছেন তারা। মাছ পাই বা না পাই, সেটা বড় কথা নয় বরং একসঙ্গে মাছ ধরার আনন্দটাই একটু আলাদা।
তিনি বলেন, সকাল থেকে আজকে মনের আনন্দে পলো বাওয়া উৎসবে যোগ দেন উপজেলার কয়েকটি গ্রামের শত শত মানুষ। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে পলো বাওয়া উৎসব।
গুরুদাসপুর মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি প্রভাষক মাজেম আলী মলিন বাংলানিউজকে জানান, পলো বাওয়ায় ধরা পড়া মাছের মধ্যে শোল ও বোয়ালই বেশি। আর পলো বাওয়া উৎসবের আনন্দ যুবক-বৃদ্ধের চেয়ে ছোট ছোট শিশুদের মধ্যে একটু বেশি। তারা তাদের বাবা-চাচা-দাদা-মামা-ভাইয়ের হাত ধরেই উৎসবে শরিক হয়।
মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান প্রভাষক মোস্তাফিজুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, এ অঞ্চলের মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই বিল ও নদীতে ‘পলো বাওয়া উৎসব’ পালন করে আসছে। প্রতি বছর শীত মৌসুমে এলাকাবাসী একত্রিত হয়ে বিলে মাছ শিকার করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৯, ২০২১
এনটি