ঢাকা: ‘বস্তিতে প্রতিটি ল্যাট্রিন/টয়লেট গড়ে ১৫০-২০০ জন মানুষ ব্যবহার করে, যা কোনোভাবেই স্বাস্থ্যসম্মত নয়। একটি বাতির জন্য দেন ২৫০ টাকা।
মৌলিক অধিকার খর্ব করে সরকারি পানি বিদ্যুৎ, গ্যাস কিনতে হয় বাজার মূল্যের চাইতে অনেক বেশি দামে। বস্তিবাসীরা যে আয়তনের জন্য ২৫০০-৩০০০ টাকা মাসে বাসা ভাড়া দেন, তা গুলশান-বনানীর অ্যাপার্টমেন্টের ভাড়ার চেয়েও বেশি।
মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘নগর হতদরিদ্রদের নাগরিক ও পরিষেবা সুরক্ষা অধিকার’ শীর্ষক সংলাপে মূল প্রবন্ধে কোয়ালিশন ফর দ্যা আরবান পুওর (কাপ) উপদেষ্টা মো. মাহবুল হক এ কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কাপ চেয়ারম্যান ডা. দিবালোক সিংহ। প্রধান অতিথি ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার শহরের সেবা গ্রামে পৌঁছে দিতে বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এরই মধ্যে গ্রামে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট সেবা পৌঁছে দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। বর্তমান সরকার দারিদ্র বিমোচনে ১৪৩টি সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পাশাপাশি কর্মজীবী নারীদের এগিয়ে নিতে ডে- কেয়ার সম্পর্কিত আইন পাসের মাধ্যমে প্রতিটি ওয়ার্ডে ডে-কেয়ার স্থাপনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। নারীদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করা হচ্ছে।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. দিবালোক সিংহ বলেন, ২০০৫ সালে রাজধানীতে মোট বস্তিবাসীর সংখ্যা ছিল ৩৪ লাখ ২০ হাজার ৫২১ জন। যা ঢাকার মোট জনসংখ্যার ৩৭.৪%। বস্তিবাসীরা তাদের নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। বিশেষ করে তাদের জন্মনিবন্ধন ও আইডি কার্ড পাওয়া কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগর অতিদরিদ্রদের বিনামূল্যে/ স্বল্পমূল্যে স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে স্থানীয় সরকারের অধীনে সিটি কর্পোরেশনের ওয়ার্ডভিত্তিক স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের আওতায় তাদের স্বাস্থ্য সেবা কার্ড দেওয়া দরকার। পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের অধীনে সিটি কর্পোরেশনের আওতায় জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইন ফরমেটে সংশোধন/সংযোজন পূর্বক নগর দরিদ্রদের জন্য নিবন্ধন নিশ্চিত করা দরকার।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রি. জেনারেল মো. জোবাইদুর রহমান, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, সমাজসেবা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক মোহা. কামরুজ্জামান, ওয়ার্ল্ড ওয়াইডের প্রোগ্রাম পরিচালক গ্রিটা ফিটিরিয়াল্ড, শ্রমিক নেতা আবুল হোসেন।
আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বারসিকের পরিচালক পাভেল পার্থ, ডেইলি অবজারভারের সিনিয়র রিপোর্টার বনানী মল্লিক এবং নগর গবেষণা কেন্দ্রের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা ইসরাত নাজিয়া।
বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০২১
এসকেবি/এমএমজেড