ফেনী: দীর্ঘদিন ধরে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে আছে ফেনীর পরশুরাম উপজেলার বিলোনিয়ায় স্থাপিত মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভটি।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্মৃতিস্তম্ভটি লতা-গুল্ম আর ঝোপ-জঙ্গলে ভরে গেছে।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধে ওই স্থানে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে সম্মুখযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখান মুক্তিযোদ্ধারা। শহীদ হন ৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। আহত হন অনেকে।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি হিসেবে বিলোনিয়ায় স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের জন্য গণপূর্ত বিভাগ ২০০৯ সালে ৫০ লাখ ৩৯ হাজার টাকার প্রাক্কলন তৈরি করে। ২০১০ সালে দরপত্র আহ্বান করা হয়। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কার্যাদেশও দেওয়া হয় অমি এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে।
পরে মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলামের নেতৃত্বে কয়েকজন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা স্থান পরিবর্তনের জন্য মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরশুরাম পৌর এলাকার সলিয়া গ্রামে স্মৃতিস্তম্ভটি নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারণ করা হয়।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের বেহাল দশায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা।
সাবেক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার হুমায়ুন শাহরিয়ার বলেন, বিলোনিয়া স্মৃতিস্তম্ভটি রক্ষণাবেক্ষণ জরুরি হয়ে পড়েছে।
মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ও আবুল কাশেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিবার মহান বিজয় দিবস ও স্বাধীনতা দিবস এলে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটু পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। তারপর আবারও আগের মতো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে।
পরশুরাম পৌরসভার মেয়র নিজাম উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী সাজেল জানান, মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভটি পৌরসভার কাছে হস্তান্তর করলে পৌর অর্থায়নে সৌন্দর্য বর্ধন করাসহ দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
পরশুরাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) প্রিয়াঙ্কা দত্ত জানান, তিনি স্মৃতিস্তম্ভটির কথা শুনেছেন। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০২১
এসএইচডি/জেডএ