বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেকুলার বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া চ্যাপ্টার আন্তর্জাতিক ওয়েবিনার, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানা যায়।
‘বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সুবর্ণজয়ন্তী’ শীর্ষক এ অনুষ্ঠানে ফোরাম ফর সেকুলার বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়া চ্যাপ্টারের সভাপতি ডা. একরাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হন প্রধান অতিথি হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক এবং প্রধান বক্তা হিসাবে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সভাপতি লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির।
মুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রী আ ক ম মোজ্জামেল হক বলেন, বঙ্গবন্ধুর ঘাতকরা ১৫ই আগস্ট একজন ব্যক্তিকে শুধু হত্যা করতে চায়নি, তারা বাংলাদেশ নামের রাষ্ট্রটিকে হত্যা করতে চেয়েছে। বাস্তবে তারা কিছুটা সফলও হয়েছিল। কারণ পরের ২১ বছর জিয়া-এরশাদ-খালেদা বাংলাদেশকে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে চেয়েছিলেন। একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছিল।
অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী, বিশেষভাবে’ ৭১-এর মুক্তিযুদ্ধের অতুলনীয় বিজয়ের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে নির্মূল কমিটি করোনা মহামারীর সীমাবদ্ধতার ভেতরও বহুমাত্রিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। যার অন্যতম অনলাইন আলোচনা।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছরে বিশেষভাবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত এক দশকে তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। ৫০ বছরে আমাদের অনেক অর্জন আছে, যা বহু দেশের জন্য অনুকরণযোগ্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।
শাহরিয়ার কবির বলেন, স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু সাংবিধানিকভাবে স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াতে ইসলাম গংদের ধর্মের নামে রাজনীতি নিষিদ্ধ করেছিলেন ধর্মের পবিত্রতা রক্ষার পাশাপাশি ধর্মের নামে হত্যা, সন্ত্রাস, নির্যাতন, বৈষম্য বন্ধ করার জন্য। দুর্ভাগ্যের বিষয় হচ্ছে ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তানপন্থী ঘাতকরা ক্ষমতায় এসে আবার পাকিস্তানের মতো ধর্মের নামে রাজনীতির পুনর্জন্ম দিয়েছে, যা আজও আমরা বন্ধ করতে পারিনি।
অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুণ উর রশীদ তার বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি ও পৃথিবীর বৃহত্তম ধর্ম ব্যবসায়ী সন্ত্রাসী সংগঠন জামাত শিবির ও তাদের দোসর বিএনপি তাদের শাসন আমলে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোকে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ, প্রশিক্ষণ গ্রহণ এবং জঙ্গি নেটওয়ার্ক স্থাপনের সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশ এবং দক্ষিণ এশিয়াকে অস্থিতিশীল করে তোলার প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করা বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কলঙ্ক হয়ে থাকবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতি ডা. একরাম চৌধুরী বলেন, লালন শাহ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, কাজী নজরুল ইসলাম ও জীবনানন্দের দেশ বাংলাদেশে, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ সব ধর্ম ও ধর্মের মানুষের আত্মত্যাগের ভিত্তিতেই বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে।
তিনিবলেন, এটা বঙ্গবন্ধুকন্যার বাংলাদেশ। এই বাংলার মাটিতে দাঁড়িয়ে আর কোনো আস্ফালনকারী, ‘৭১ এর প্রেতাত্মা, পাকিস্তানি দালাল-রাজাকার-আল বদরের বংশধরেরা আস্ফালন করবে, হত্যাকাণ্ড করবে, নৈরাজ্য করবে আমরা বেঁচে থাকতে তা হতে দেব না। আজকের দিনে এটাই আমাদের দীপ্ত শপথ।
আলোচনা সভায় অংশগ্রহণ করেন অস্ট্রেলিয়া আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হারুণ উর রশীদ, নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখার সহসভাপতি সাজ্জাদ সিদ্দিকী, নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখার সহসভাপতি হাসান শিমুল ফারুক রবীন, নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখার সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান ও নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক জুয়েল তালুকদার। নির্মূল কমিটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, নির্মূল কমিটি অস্ট্রেলিয়া শাখার সহসভাপতি সাজ্জাদ সিদ্দিকী, হাসান শিমুল ফারুক রবীন, সাংস্কৃতিক সম্পাদক কাজী আশফাক রহমান।
বাংলাদেশ সময়: ১৮২৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০২১
এনএইচআর