বরগুনা: বরগুনার আমতলীতে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক করে গণধর্ষণের শিকার হয়েছে এক কিশোরী (১৭)। রোববার (১২ ডিসেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কুলাইরচর গ্রামে প্রেমিকের বাড়ির পাশের একটি ধান ক্ষেতে এ ঘটনা ঘটেছে।
তাকে তুলে নিয়ে ধান খেতে গণধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা ঘটেছে মধ্যে।
অভিযোগ পেয়ে সোমবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে পুলিশ প্রেমিক জুয়েল মৃধা ও তার বন্ধু কাওসারকে গ্রেফতার করেছে। আর ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে, মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে।
ভিকটিম ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের ওই কিশোরীর সঙ্গে ২ মাস আগে হলদিয়া ইউনিয়নের কুলাইরচর গ্রামের ইউসুফ মৃধার ছেলে ১ সন্তানের জনক জুয়েল মৃধার (২২) মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর একমাস আগে উপজেলার গাজীপুর বন্দরে তাদের সরাসরি দেখা হয়।
রোববার সকালে ভিকটিম তার খালাবাড়ী গাজীপুরে বেড়াতে আসে এবং মুঠোফোনে প্রেমিক জুয়েল মৃধাকে জানায়। এরপর ওই দিন রাত ৮টার দিকে কেনাকাটার নাম করে ভিকটিম খালার বাসা থেকে বের হয়ে গাজীপুর বন্দরে গিয়ে জুয়েল মৃধার সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় কৌশলে ভিকটিমকে নিজের বাড়িতে নেওয়ার জন্য জুয়েল তার মুঠোফোন নিয়ে যায়।
এক পর্যায়ে ভিকটিম জুয়েলের বাড়ি যেতে রাজি হয়। তখন জুয়েল তার সহযোগী একই গ্রামের বশির মোল্লার ছেলে কাওসার মোল্লা (১৮)সহ ভিকটিমকে নিয়ে কুলাইচর গ্রামে নিয়ে যায়। রাত অনুমানিক ১০টার দিকে ভিকটিমকে বাড়ির পরিবর্তে পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে নিয়ে জুয়েল ও কাওসার একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে রাত ১২- ১টার দিকে ভিকটিমকে সহযোগী ধর্ষক কাওসার গোপনে নিজের বাড়িতে নিয়ে রাখে।
সোমবার ভোরে ভিকটিমকে কাওসার বাড়ি থেকে বের করে এনে রাস্তায় ছেড়ে দেয়। এ সময় ভিকটিম কান্না করতে করতে রাস্তা দিয়ে টেপুরা বাজারের দিকে হেঁটে যাওয়ার সময় পথচারী বাবুল শিকদার নামে এক ব্যক্তি কৌতুহল বসতঃ কারণ জিজ্ঞেস করেন। তখন ভিকটিম তার সঙ্গে যা যা ঘটেছে তার সবকিছুই খুলে বলেন। সবকিছু শুনে বাবুল শিকদার ভিকটিমকে স্থানীয় ইউপি সদস্য জোসেফ তালুকদারের বাড়িতে পৌঁছে দেয়। পরে চৌকিদারকে পাঠিয়ে সদস্য জোসেফ তালুকদারকে জুয়েল ও কাওসারকে তাদের বাড়ি থেকে ধরে আনেন। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আমতলী থানায় জানালে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে অভিযুক্ত জুয়েল মৃধা ও কাওসারকে আটক করে এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
পথচারী বাবুল শিকদার মুঠোফোনে বাংলানিউজকে বলেন, সোমবার সকালে রাস্তায় ধর্ষিতা কিশোরীকে কান্না করতে দেখে কারণ জিজ্ঞেস করলে সে সবকিছু খুলে বলে। পরে ভিকটিমকে স্থানীয় ইউপি সদস্য জোসেফ তালুকদারের বাড়িতে পৌঁছে দেই।
গ্রাম পুলিশ মো. মামুন মিয়া বলেন, আমি ইউপি সদস্যের নির্দেশে অভিযুক্ত দুই ধর্ষককে তাদের বাড়ি থেকে ধরে এনে পুলিশে সোপর্দ করেছি।
ইউপি সদস্য জোসেফ তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মুঠোফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভিকটিমকে জুয়েল মৃধা নিজের বাড়ি নিয়ে আসে। পরে কৌশলে ধান ক্ষেতে নিয়ে জুয়েল ও তার সহযোগী কাওসার জোরপূর্বক একাধিকবার ধর্ষণ করেছে।
আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রনজিৎ কুমার সরকার মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন আছে। প্রাথমিকভাবে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় প্রেমিকসহ অপর সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) ভিকটিমের মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য কোর্টে আবেদন করা হবে।
বাংরাদেশ সময়: ২০০১ ঘণ্টা, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২১
এমএমজেড