ঢাকা: ‘মহান বিজয় দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে গোয়েন্দা পুলিশ, এপিবিএন, এসএসএফ, পিজিআরের সমন্বয়ে চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে’।
প্রতিটি ভেন্যুতে এসবি, এসএসএফ, র্যাব ও ডিএমপির ডগ স্কোয়াড দিয়ে সুইপিং করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার (ডিএমপি) মোহা. শফিকুল ইসলাম।
মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১২টায় জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত এক সংবাদ সম্মলনে এ কথা বলেন ডিএমপি কমিশনার।
ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, মহান বিজয় দিবস ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে সংসদ ভবনের আশ-পাশে এলাকার প্রতিটি বহুতল ভবনে পোশাকে ও সাদা পোশাকে নিযুক্ত থাকবেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। আমন্ত্রিত অতিথিদের নিরাপত্তায় তল্লাশির মধ্য দিয়ে প্রবেশ করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি পরিপালনে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে যে বিধি-নিষেধ দেওয়া হয়েছে তা কঠোরভাবে পালন করা হবে।
তিনি বলেন, নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে গত এক সপ্তাহ ধরে যতগুলো ভেন্যু রয়েছে, সবগুলোর আশপাশে সন্দেহভাজন আবাসিক হোটেল, বহুতল ভবন, মেস, বাসাবাড়িতে ব্লক রেইড করা হচ্ছে। যাতে করে আমাদের নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে আগে থেকেই কোনো সন্ত্রাসী-জঙ্গি ঢুকে থাকতে না পারে।
বিশেষ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোয়াট ও বোম ডিসপোজাল ইউনিট সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকবে বলেও জানান ডিএমপি কমিশনার।
বিজয় দিবস ও বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করা হয়েছে উল্লেখ করে ডিএমপি কমিশনার বলেন, ১৫ ডিসেম্বর থেকে ১৭ তারিখ পর্যন্ত চলবে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী, ভারতের রাষ্ট্রপতি অংশ নেবেন। জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে শুরু করে বঙ্গবন্ধু ভবন, সংসদ ভবন চত্বরে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে প্যারেড হবে এবারও বর্ণিল ও জাঁকজমকপূর্ণ।
নিরাপত্তা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমন্ত্রিত দেশি-বিদেশি ভিভিআইপি, ভিআইপিরা যেসব রুটে চলাচল করবে সেসব রুটে প্রটেকশনের পাশাপাশি, রুফটপ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। সংসদ ভবন এলাকার আশপাশে যতগুলো ভবন আছে সেখানে প্রত্যেক ফ্লোরে পুলিশ সদস্যরা মোতায়েন থাকবে। সংসদ ভবন এলাকায় ডাইভারসন করা হবে। সেটির প্লান আমরা জানিয়ে দেবো। আর এই অনুষ্ঠান উপলক্ষে প্রতিটি ভেন্যুতেই আমন্ত্রিত অতিথিরা যানবাহন ব্যবহার করে আসবেন। চারদিক থেকে যানবাহন আসবে। তাদের যানবাহন পার্ক করতে আমাদের বেগ পেতে হবে। তাই ভেন্যুর আশপাশে যানজট তৈরির সম্ভাবনা আছে। তাই আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রতি অনুরোধ থাকবে সময় নিয়ে আসার জন্য।
প্যারেড স্কোয়ারে সাতটি দেশের ৩০২টি দেশের বিদেশি অতিথিরা অংশ নেবেন। সেখানেও আমাদের আলাদা নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এবারও সাধারণ দর্শকদের জন্য প্যারেড স্কোয়ারের ৩,৪,৫, ১৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর গেট খোলা থাকবে। করোনার কারণে স্বাস্থ্যবিধি কঠোরভাবে পরিপালন করা হবে। আর প্রত্যেককেই তল্লাশির মধ্য দিয়ে ঢুকতে হবে। আর শহরের বিভিন্ন জায়গায় রোড প্লানের ম্যাপ বিল বোর্ডের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হবে। যাতে করে কেউ না বুঝে হয়রানির মুখে না পড়েন। আমন্ত্রিত অতিথিদের প্রত্যেককে ধৈর্যসহকারে বিরক্ত না হয়ে অংশ নেওয়ার অনুরোধ, কারণ আমাদের নিরাপত্তা আপনাদের জন্যই।
নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা গ্রহণের নেপথ্যে কোনো হুমকি রয়েছে কিনা? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, এবারের অনুষ্ঠানে নিরাপত্তার বিশেষত্ব হলো, অন্যান্য অনুষ্ঠানে ইউনিফর্ম পুলিশ ভিত্তিক, তবে এখানে পুরোটাই ইনটেলিজেন্স নির্ভর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রতিটা কর্নারে আমাদের গোয়েন্দা সদস্যরা কাজ করছে। যাতে ন্যূনতম কোনো ব্যত্যয় না ঘটে।
স্পেসিফিক কোনো হুমকি নেই। বৈশ্বিক পরিস্থিতি ও দেশীয় অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন ইস্যু মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
জঙ্গি তৎপরতা প্রতিহত করতে নিরাপত্তা প্লানে কোনো ব্যবস্থা রয়েছে কিনা? জানতে চাইলে ডিএমপি কমিশনার বলেন, জঙ্গি তৎপরতার ব্যাপারে কখনো নিশ্চিতভাবে বলতে পারি না যে, আমরা নিরাপদ আছি। কারণ জঙ্গিরা সব সময় তৎপর থাকে। সুযোগ পেলেই তারা ছোবল মারার চেষ্টা করে সেটিই নিরাপত্তা প্লানে রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
এসজেএ/এএটি