ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুয়েট শিক্ষকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২১
কুয়েট শিক্ষকের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে ড. মো. সেলিম হোসেন -ফাইল ছবি

খুলনা: ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) প্রয়াত শিক্ষক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামে নিজ বাড়ির কবরস্থান থেকে তাকে দাফন করা হয়।

কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মরদেহ উত্তোলনের জন্য যাচ্ছি। মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উত্তোলন করা হবে। ১৫ ডিসেম্বর (বুধবার) ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ আবার দাফন করা হবে।

ময়নাতদন্তের জন্য খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. সেলিম হোসেনের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামের নিজ বাড়ির কবরস্থান থেকে কুমারখালী থানার পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তার মরদেহ উত্তোলন করা হচ্ছে। এরপর মরদেহ কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হবে।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান তালুকদার মঙ্গলবার (১৫ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পর মরদেহ উত্তোলনের জন্য যাচ্ছি। সন্ধ্যার পর মরদেহ উত্তোলন করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) মরদেহ আবার দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (৩০ নভেম্বর) বেলা ৩টায় মারা যান কুয়েট শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেন (৩৮)। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের লালনশাহ হলের ডিসেম্বর মাসের খাদ্য-ব্যবস্থাপক (ডাইনিং ম্যানেজার) পদে নিজের লোককে নিয়োগ দেওয়ার জন্য ড. সেলিমকে চাপ দেন কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান। ঘটনার দিন দাপ্তরিক কক্ষে সাদমান নাহিয়ান ও তার অনুগতদের অশালীন আচরণ ও মানসিক নির্যাতনেরও শিকার হন ড. সেলিম।

সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, সাদমান নাহিয়ান ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা প্রায় আধঘণ্টা ওই শিক্ষকের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। পরে শিক্ষক ড. সেলিম হোসেন দুপুরে খাবারের জন্য বাসায় যান। দুপুর ২টার দিকে স্ত্রী লক্ষ্য করেন তিনি বাথরুম থেকে বের হচ্ছেন না। পরে দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানের নেতৃত্বে কিছু সাধারণ ছাত্রের নামে জেরা, অপমান, অবরুদ্ধ করে রাখা ও মানসিক নির্যাতনে ড. সেলিমের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে।

এদিকে প্রফেসর ড. মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনায় দুই দফা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কুয়েট প্রশাসন। আর

দোষীদের চিহ্নিত করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারসহ ৫ দফা দাবিতে বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে একাডেমিক কার্যক্রম বর্জন করে শিক্ষক সমিতি। পাশপাশি প্রতিবাদ সমাবেশ করে কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি জানান শিক্ষকরা।

এদিকে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে  বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্যাম্পাস বন্ধসহ বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পর ৭টি আবাসিক হলে থাকা প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী হল ছাড়েন।

আর ড. সেলিম হোসেনের 'অস্বাভাবিক' মৃত্যুর ঘটনায় শনিবার (৪ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান সেজানসহ ৯ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৮ ঘণ্টা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২১
এমআরএম/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।