ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাবি ছাত্রীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, শরীরে আঘাতের চিহ্ন

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৫, ২০২১
ঢাবি ছাত্রীর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন, শরীরে আঘাতের চিহ্ন

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নৃত্যকলা বিভাগের ছাত্রী এলমা চৌধুরী মেঘলার (২৬)  মরদেহের ময়নাতদন্ত শেষ হয়েছে। বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত করেন ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসকরা।

এরপর স্বজনরা তার মরদেহ নিয়ে গ্রামের বাড়ি ধামরাইয়ের পাটানটুলা চলে যান।

ঢামেক মর্গ সূত্র জানায়, মরদেহ থেকে ভিসেরাসহ বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে।

এদেক ঢামেক মর্গে নিহত ঢাবি ছাত্রীর চাচা গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরী জানান, কানাডা প্রবাসী ইফতেখারের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় এলমার। এরপর তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। দেড়মাস পর পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের ৩-৪ মাস পর ইফতেখার আবার কানাডা চলে যায়। সেই থেকেই শুরু হয় এলমাকে সন্দেহ।

তিনি বলেন, বয়ফ্রেন্ড আছে, তার সঙ্গে নিয়মিত দেখা করে- এমন সন্দেহে এলমার ওপর মানসিক নির্যাতন ইফতেখার শুরু করে। তাকে কারো সঙ্গেই যোগাযোগ করতে দিত না। এমনকি পরিবারের সঙ্গেও না। বিদেশ থেকেই হুমকি দিত দেশে আসার পর এলমাকে শিক্ষা দেবে।

তিনি বলেন, ইফতেখার কবে দেশে এসেছে তাও জানি না। শুনেছি ৫দিন আগে সে দেশে এসেছে। মঙ্গলবার এলমার মাকে ফোন দিয়ে ইফতেখার জানায়, তার মেয়ে (এলমা) রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছে। তাকে দরজা ভেঙে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পরে স্বজনরা সবাই ওই হাসপাতালে গিয়ে এলমাকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান।

এলমা কিছুতেই আত্মহত্যা করতে পারে না দাবি করে তিনি আরও বলেন, তার মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। স্বামী ইফতেখার তাকে নির্যাতন করে হত্যা করেছে।

জানা গেছে এর আগেও বিয়ে করেছিল ইফতেখার। সেই সংসারে তার একটি সন্তানও আছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এলমার স্বামীর কঠোর বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা।

চার বোনের মধ্যে সবার বড় ছিল এলমা। তার পরিবার ধামরাইয়ের পাঠানটুলায় থাকে। বাবা সাইফুল ইসলাম চৌধুরী ব্যবসায়ী।

এদিকে ঢাবির নৃত্যকলা বিভাগের ৪র্থ বর্ষের ছাত্র রিফাত মাহমুদ বলেন, বিয়ের পর থেকেই এলমাকে সহপাঠী বা শিক্ষক কারো সঙ্গে কথা বলতে বা যোগাযোগ করতে দিত না তার স্বামী। তখন থেকেই আমরা বুঝেছিলাম তিনি খুব কষ্টে আছেন। আপু খুব সংস্কৃতিমনা ও খোলা মনের ছিলেন। ওনার ইচ্ছা ছিল পড়ালেখা শেষ হলে ডান্স একাডেমিতে শিক্ষকতা করবেন।

এদিকে ময়নাতদন্তের আগে পুলিশের করা সুরতহাল প্রতিবেদনে বনানী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গোলসানারা বানু উল্লেখ করেন, মরদেহের উপরের ঠোটে কালচে জখম, নাকে আঘাতের চিহ্ন ও কালচে শিরা জখম রয়েছে। এছাড়া ঘাড়ে লম্বালম্বি কালচে জখম, গলার উপরিভাগে থুতনিতে কালচে জখম, পিঠের ডান পাশে কালচে জখম রক্ত জমাট, বাম পায়ের বুড়ো আঙ্গুলে ক্ষত চিহ্ন এবং দুই পায়ের হাঁটুর নিচে কালচে জখমের চিহ্ন আছে। ডান ও বাম হাতের আঙ্গুলে কাটা ছেড়া জখম আছে। এছাড়া ওই বাসার সিলিং ফ্যানের সঙ্গে বাধা একটি ওড়নাও আলামত হিসেবে উদ্ধারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে সুরতহাল প্রতিবেদনে।

এর আগে, মঙ্গলবার বিকেলে গুলশান ইউনাইটেড হাসপাতাল থেকে এলমার মরদেহটি উদ্ধার করে বনানী থানা পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেক হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

 

>>>আরও পড়ুন: ঢাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু: স্বামী তিন দিনের রিমান্ডে

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, ১৫ ডিসেম্বর , ২০২১
এজেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।