পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার তুলাতলি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ আল ইসলাম চয়ন।
সহপাঠীরা যখন বিদ্যালয়ের ক্লাস করছে, তখন চয়ন মা ও মামার হাত ধরে পটুয়াখালী আদালতের বারান্দায় ঘুরছে।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) চয়ন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আশিকুর রহমানের কাছে জামিনের আবেদন করলে বিচারক আবেদনটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালে পাঠান। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুন্যালের বিচারক মো. মইনুল হক তাৎক্ষণিকভাবে শিশু চয়ন এবং তার ১৭ বছর বয়সী বোন তৃপ্তিকে জামিন দেন এবং বাদী পক্ষের আইনজীবীকে তলব করেন। এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
চয়নের আইনজীবী মো. সোলায়মান সিকদার বলেন, কলাপাড়া উপজেলার তুলাতলি এলাকার বাসিন্দা মাসুম তালুকদার ২০১৭ সালের ১৯ অক্টোবর মারা যান। এরপর মাসুম বিল্লাহ নামের এক ব্যক্তি ৮৪ লাখ টাকা দাবি করে মাসুম তালুকদারের ওয়ারিশদের নামে এ বছরের ১২ আগস্ট পটুয়াখালী সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় শিশু চয়নের বয়স উল্লেখ করা হয়েছে ২২ বছর। প্রকৃতপক্ষে জন্ম নিবন্ধন অনুযায়ী চয়নের জন্ম তারিখ ২ জানুয়ারি ২০১৩।
এছাড়া চয়নের বোন তুলাতলি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী সাদিয়া ইমরোজ তৃপ্তির বয়স ১৭ বছর হলেও তার বয়স ১৯ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। চয়নের মা, দাদিসহ ওই মামলায় মোট আটজনকে আসামি করা হয়েছে।
বাদী মাসুম বিল্লাহ পটুয়াখালী সদর উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টাইন কালিকাপুর এলাকার (মিরাজ ভবন) বাসিন্দা। এ ঘটনায় আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করলে আসামিরা হাজির হন। বুধবার আসামি শিশু চয়ন এবং তার পরিবারের সদস্যরা আদালতে উপস্থিত হলে আদালতে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়।
এ বিষয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী মো. মোহসীন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। এ বিষয়ে তিনি আদালতে কথা বলবেন বলে জানান।
পটুয়াখালী জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিষয়টি দুঃখজনক। মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে বিচার প্রার্থী এবং আইনজীবীদের আরও সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।
শিশু চয়নের মা সাবরিনা বিশ্বাস মনু বলেন, পরিকল্পিতভাবে তাদের হয়রানি এবং জমি দখলের লক্ষ্যেই এ ধরনের মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
কালের কন্ঠের সৌজন্যে
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৭ ঘণ্টা, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২১
এনএসআর